ভারতে ফ্ল্যাট পাচ্ছে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফ্ল্যাট দেয়া হবে। সেই সঙ্গে দেয়া হবে সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তাও। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এমনটাই বলা হয়েছে। খবর রয়টার্স।

পরিকল্পনামতে, ১ হাজার ১০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সরকারি ফ্ল্যাট দেয়া হবে। মোট ২৫০টি ফ্ল্যাটে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে।

২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ওই অভিযানে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। গণহত্যা থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী দেশগুলোতে, বিশেষ করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গারা।

মূলত বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার কুতুপালংয়ে আশ্রয় নেয় তারা। এখানে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লক্ষাধিক। এর মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় ২৫ হাজার রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে উন্নত আবাসন প্রকল্পে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

ওই সময় কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা ভারতেও আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) এক হিসাবে দেশটিতে বর্তমানে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে। দিল্লির আশপাশে বেশ কিছু বস্তিতে মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা।

নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার দীর্ঘদিন ধরে এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ‘অবৈধ অভিবাসী’ ও ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ বলে অভিহিত করে আসছে।

তবে তাদের আশ্রয় ও নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি–সেই অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বুধবার (১৭ আগস্ট) ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আবাসন ও শহর ব্যবস্থাপনা বিষয়ক মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকের পর রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এদিন এক টুইটবার্তায় ওই মন্ত্রী জানান, দিল্লির বক্করওয়ালায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফ্ল্যাট দেয়া হবে। ভারত বরাবরই এ দেশে আশ্রয়প্রার্থীদের স্বাগত জানিয়েছে। একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দিল্লির বক্করওয়ালা এলাকার অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য তৈরি করা ফ্ল্যাটে (ইডব্লুএস) পাঠিয়ে দেয়া হবে। তাদের সাধারণ সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে এবং দিল্লি পুলিশ ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার জন্য থাকবে।’

সরকারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া রোহিঙ্গাদের জন্য ২৫০টি বিনা মূল্যে ফ্ল্যাট তৈরি করা হয়েছে। সেই ফ্ল্যাটই হবে রোহিঙ্গাদের নতুন ঠিকানা।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১১০০ রোহিঙ্গাকে এসব ফ্ল্যাটে স্থানান্তর করা হবে। ফ্ল্যাটগুলোতে পাখা, তিন বেলার খাবার, ল্যান্ডলাইন ফোন ও টিভির মতো সুবিধা থাকবে। করোনা মহামারি সময় রোগীদের আইসোলেশনের জন্য এই ফ্ল্যাটগুলো ব্যবহার করেছিল দিল্লি সরকার।

image_pdfimage_print