শত শত একর জমির বোরো ফসল পানির নিচে

উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার শত শত একর জমির বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। এলাকার ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে আরো বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

খালিয়াজুরি উপজেলার পাঁচহাট গ্রামের কৃষক মো. ইদ্রিছ আলী বলেন, নিম্নাঞ্চলের হাজারো একর বোরো ধানের জমি অকাল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

 

উপজেলা সদরের কৃষক মনির হোসেন বলেন, তাঁর নিজের মালিকানাধীন প্রায় ২০ একর জমির ধান পানির নিচে চলে গেছে। লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন, আব্দুর রউফ জানান, তাঁদের ১৫ একর জমির ফসল পানিতে নষ্ট হয়েছে।

 

এদিকে, খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, চলতি বছর খালিয়াজুরিতে মোট ৫২ হাজার ১৬৬ একর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০০ একর জমির ফসল। গত ৩০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এসব জমি তলিয়েছে। খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়নের কীর্তনখলা হাওর, চুনাই হাওর, বাদিয়ারচর হাওর, টাকটারের হাওর, মনিজান হাওর, লেবরিয়া হাওর, হেমনগর হাওর চাকুয়া ইউনিয়নের গঙ্গবদর হাওর, নয়াখাল হাওর, গাজীপুর ইউনিয়নের বাগানী হাওর ও ডাকাতখালি হাওরের অধিকতর নিম্নস্থানে ও ফসলরক্ষা বাঁধের বাইরে আবাদ করা ওই সব তলিয়ে যাওয়া জমির ফসল ছিল দুধ ও দানা পর্যায়ে।

kalerkantho

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত শনিবার সন্ধ্যায় জানান, ভারতের মেঘালয় প্রদেশের চেরাপুঞ্জিতে ভারি বৃষ্টিপাত হয়ছে। এর ফলে বাংলাদেশের অংশের সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত যাদুকাটা, সুরমা, ধনু, বাউলাই ও অন্যান্য প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় খালিয়াজুরি উপজেলার হাওরসমূহের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন বিলের বোর ফসল তলিয়ে গেছে। ৩০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত ধনু নদীর পানি বেড়েছে পৌনে ৬ ফুট। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ৩ ফুট।

তিনি আরো বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আগামী কয়েকদিনও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। যদি সেখানে বৃষ্টি হয় তবে কয়েক দিনের মধ্যে সেই বৃষ্টির পানি এসে তা ধনু নদীতে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।

এদিকে তিনি জানান, নেত্রকোনার হাওরে এবার ১৮৩ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ২৩ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এসব বাঁধ মজবুত হলেও অতিরিক্ত পানি বেড়ে উপচে পড়লে হাওরের বোরো ফসল রক্ষা কঠিন হয়ে যাবে।