নিজস্ব প্রতিবেদক
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটোওয়ারী কৌশলে পৌরসভার নিবন্ধনকৃত ২১ জন ঠিকাদারের লাইসেন্স নবায়ন না করে ৪জন ঠিকাদারের সাথে সিন্ডিকেট করে তাদের লাইসেন্স উন্নয়নের ৭ কোটি ২০ লক্ষ টাকার ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
খবর পেয়ে (৮ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সকালে বঞ্চিত ঠিকাদাররা পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী ও কার্যসহকারীকে অবরুদ্ধ করে রাখে৷ পরে মেয়র ঠিকদারদেরকে লাইসেন্স নবায়ন করার কথা পরিস্থিতি শান্ত করে৷
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রামগঞ্জ পৌরসভার তালিকাভুক্ত ২৫ জন ঠিকাদারের মধ্যে ২১ জন ঠিকাদার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পৌরসভার কার্যসহকারী নুর হোসেনের কাছে নবায়ন ফি জমা দিলেও মেয়র কৌশলে তাদের লাইসেন্স আটকে রেখে শুধু তার সিন্ডিকেটের জয় এন্টারপ্রাইজ, এস এস ট্রেডার্স, এন বি ট্রের্ডাস, আলমগীর ট্রেডার্স নামে ৪ ঠিকাদারের লাইসেন্স নবায়ন করে ইজিপিতে টেন্ডারের সুযোগ করে দিয়ে ৭ কোটি ২০ লক্ষ টাকার কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেণ।
এর আগে চলতি বছরের ১৬ নভেম্বর পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি টেন্ডার খুবই অল্প প্রচার সংখ্যার বাংলা দৈনিক ও অপরিচিত একটি ইংরেজী দৈনিকে মোট ১১টি গ্রুপে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ইজিপি সিস্টেম অনুযায়ী টেন্ডারে অংশগ্রহনের শেষ তারিখ ছিল ০২ ডিসেম্বর৷ এর মধ্যে ২১জন ঠিকাদারের লাইসন্সে নবায়ন না হওয়ায় তারা ইজিপিতে অংশগ্রহন করতে পারে নাই। ফলে সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের ৪ ঠিকাদার ১১টি প্রকল্পের বিপরিতে মেয়রের সাথে ৬% হারে সমঝোতা করে ইজিপিতে টেন্ডারে অংশগ্রহন করেন।
পৌরসভার নিবন্ধিত ঠিকাদারদের মধ্যে যারা টেন্ডারে অংশ নেওয়ার সুযোগই পাননি তাদের মধ্যে মমতাজ ট্রের্ডাস, সাফওয়া ট্রেডার্স, সালমান ট্রেডার্স, লামিয়া এন্ড তানবির ট্রেডার্স, ভুঁইয়া ট্রেডার্স সহ ২১ জন ঠিকাদার জানান, আপডেট টেন্ডার আইন অনুযায়ি সব সরকারি টেন্ডার ইজিপিতে করার নিয়ম থাকলেও মেয়র আমাদের লাইসেন্স নবায়নের কথা বলে আটকে রেখে খুবই অল্প প্রচার সংখ্যার বাংলা দৈনিক ও অপরিচিত একটি ইংরেজী দৈনিকে টেন্ডার আহবান করে শুধু তার পচন্দের ৪টি লাইসেন্স নবায়ন করে তাদের লাইসেন্সে প্রকল্প ভাগ বাটোয়ারা করে নেই।
এখানে আমাদেরকে বঞ্চিত করে মেয়র ৬%হারে বিশাল লেনদেন করেছেন। সেকারনেই ঘোষিত টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে অবিলম্বে রিটেন্ডার করার জন্য স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছি।
পৌরসভা কার্যসহকারি নুর হোসেন জানান, নিবন্ধনকৃত ২১ জন ঠিকাদার লাইসেন্স নবায়নের ফি আমার কাছে জমা দিয়েছে। আমি সকল প্রক্রিয়া শেষ করে মেয়র সাহেবকে বার বার বলার পরও তিনি না করলে আমার কিছু করার নাই।
রামগঞ্জ পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন জানান, নিয়ম মোতাবেক পত্রিকায় টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। ২১টি লাইসেন্স কেন নবায়ন হয়নি সেটা আমার জানা নাই। ৫জন ঠিকাদার টেন্ডারে অংশগ্রহন করে ৪জন টেন্ডার পান৷ শান্তা ট্রেডার্স সবগুলো প্রকল্পে লয়েস্ট হলে তার লাইসেন্স নবায়ন না থাকায় সেটি বাতিল হবে।
রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটোওয়ারী জানান, বঞ্চিত ঠিকাদারগণ তাদের লাইসেন্স নবায়ন না হলে তারা আমার কাছে আসা উচিৎ ছিল। আমি ঢাকা থেকে আসার পর তাদের লাইসেন্স নবায়ন করে দিবো। এখন নবায়ন করলেও তো তারা এ টেন্ডারে অংশগ্রহনের সুযোগ নাই এবং ভাগ বাটোয়ারাসহ এসব বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নাই।