বিএনপির সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য। এজন্যই বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন একটা সন্ত্রাসী সংগঠন বলে দাবি করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার (২৭ আগস্ট) উত্তর মুগদার মদিনাবাগে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও অসহায়-দুঃস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ দাবি তোলেন তিনি।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন-ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা ও সঞ্চালনা করেন-ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন দাবি করে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, তারা বিভিন্ন সময় হয়তো বিভিন্ন পন্থায় ক্ষমতা দখল করেছে, কিন্তু গণমানুষের দল হয়ে উঠতে পারে নাই। কারণ, তারা গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অনুপস্থিত, কিন্তু মানুষের অধিকার হরণে পারদর্শী। তারা মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করে না, তারা নিজেদের দলীয় সার্থের জন্য এদেশের জনগণকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় আসতে চায়। যাতে করে এদেশকে আবারো জঙ্গি এবং দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালের পরে বিএনপি-জামাত নানা ধরনের ষড়যন্ত্র, নির্যাতন, গুম, হত্যা করেও আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের আদর্শ থেকে টলাতে পারেনি। নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে গেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমানসহ বিএনপির একাধিক নেতা জড়িত, ২০০৫ সালের দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা, ২০১৪ সালের আগুন সন্ত্রাস ও নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করাই প্রমাণ করে বিএনপি একটি জনবিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন। শুধু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীই নয়, বিএনপি-জামাতের হাত থেকে গণমাধ্যম কর্মীরাও রক্ষা পায় নাই। তাদেরকেও নানাভাবে নির্যাতন, গুম, খুন করেছে।
শেখ পরশ আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সৃষ্টি হয়েছিল জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তাই আমরা সর্বদা জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দায় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে আপনাদের যে কষ্ট হচ্ছে সেটা আমরা উপলব্ধি করি। খুব শীঘ্রই বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবো। আপনারা বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রতি আস্থা রাখেন এবং তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ুর জন্য দোয়া করবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেলাম, সেই হিমালয়সম মানুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সাথে জিয়াউর রহমান জড়িত। ঠিক সেভাবে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক জিয়া।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামাত চায় না এদেশের মানুষ ভাল থাকুক। এদেশের মানুষের উন্নয়ন হোক। বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রমে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে সেই মুহূর্তে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিএনপি-জামাত। আমি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের বলতে চাই, বিএনপি-জামাত আন্দোলনের নামে যদি জনগণের জানমালের ক্ষতি করার চেষ্টা করে তাহলে তাদেরকে কঠোরভাবে প্রতিহত করবেন। যেনো আন্দোলনের নামে কোন সন্ত্রাস-নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে।
এর আগে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিসৌধে এবং ১৯৯৫ সালে বিএনপির সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত যুবলীগ নেতা শেখ বদর উদ্দিন বদু’র ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ১০টায় জুরাইন কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন করে যুবলীগ।
এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, তাজউদ্দিন আহমেদ, জসিম মাতুব্বর, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মো. বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, মো. সোহেল পারভেজ, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান, উপ-প্রচার সম্পাদক আদিত্য নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ।