জমজমাট এক আয়োজনের পর কাতার সমর্থকরা অপেক্ষায় প্রহর গুনছিলো বিশ্বকাপে সুন্দর একটি জয় দেখার, কারণ আয়োজক দেশ হিসাবে এর আগে কোনো দল হারের স্বাদ নেয়নি, এবং এটাই যেনো প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে বুকে তো আশা বাধতেই পারেন তারা, কিন্তু ইতিহাস গড়ে সেই আশা যেনো দুমরে মুচরে দিলো ইকুয়েডরের ফরোয়ার্ড এনার ভ্যালেন্সিয়ার।শুরু হলো ২-০ গোলের হার দিয়ে স্বাগতিকদের বিশ্বকাপ যাত্রা।
দুই দলের ফিফা র্যাংকিং এর দূরত্বটা খুব একটা বেশি না, ৫০ তম স্থানে থাকা কাতারের থেকে মাত্র ছয় ধাপ এগিয়ে ইকুয়েডর, তবে অভিজ্ঞতায় যে যোজন যোজন দূরে স্বাগতিকরা। ম্যাচের শুরুতেই ডিফেন্স মনোভাব নিয়ে ফর্মেশন ঠিক করে কাতার বস ফেলিক্স সানচেজ, ৫-৩-২ এর বিপক্ষে ইকুয়েডরকে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে মাঠে পাঠান বস গুস্তাভো আলফারো।
বাঁশি বাজার সাথে সাথেই যেনো ফেটে পরলো আল বায়াত স্টেডিয়াম, খেলার ৫ম মিনিটেই ভ্যালেন্সিয়ার হেড মাঠের একপাশকে নিশ্চুপ করে দেয়, শুরু হল হলুদ পতাকার ঢেও ,মানে বিশ্বকাপের প্রথম গোল , কিন্তু মূহুর্তেই যেনো সব বদলে যায় , ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) জানায় গোলটি ছিলো অফসাইড, স্কোর আবারো সমান হয়ে যায় দুই দলের।
ম্যাচের ১৫ তম মিনিটেই মিডফিল্ডার সেবাস মেন্দেজ বক্সে পাস বাড়ান ভ্যালেন্সিয়াকে, বল ধরার জন্য সামনে এগিয়ে আসেন কাতারের গোলকিপার সাদ আল–শেব, বল ঠেকাতে গিয়ে উল্টো ফাউল করে বসেন তিনি , রেফারির বাঁশিতে পেনাল্টি নিশ্চিত হয় ইকুয়েডরের, সেখান থেকেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় ভ্যালেন্সিয়া। যা ছিলো বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম ওপেনিং পেনাল্টি গোল।
দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ভ্যালেন্সিয়া যেনো কাল হয়ে দাঁড়ায় কাতারের জন্য, ম্যাচের ৩১ মিনিটে প্রেসিয়াদোর অ্যাসিস্টে ইতিহাস গড়া গোল করে দলকে ২-০ ব্যাবধানে এগিয়ে নিয়ে যান। প্রথম আর্ধ শেষ হওয়ার একদম শেষ মূহুর্তে ম্যাচের প্রথম সুযোগটি আসে কাতারের, আল হেইদোসের ক্রস বক্সে একদম ঠিক জায়গায় পেয়েছিলেন কাতারের স্ট্রাইকার আল মোয়েজ আলী, কিন্ত তাঁর হেডটি ডান পাশ দিয়ে গোল পোষ্টের পাশ কেটে চলে গেলে ২-০ গোলের ব্যাবধান নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিকদের।
ম্যাচে আরো বেশ কিছু সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি ইকুয়েডর, তবে ৭৭ মিনিটে ভ্যালেন্সিয়ার চোট যেনো দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়ায় ইকুয়েডরের কোচ গুস্তাভো আলফারোর, ফলে মাঠ থেকে তুলে নেন তিনি এই ফরোয়ার্ডকে।
ম্যাচে ৪৭% বল নিজেদের দখলে রাখলেও গোলপোস্টে কোনো শট নিতে পারেনি কাতার, কিন্ত নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপ লড়াইয়ের জন্য মাঠে নেমে খেলাটাই বাঁ কম কি তাদের জন্য। তবে ইকুয়েডরের জন্য জয়টি বেশিই গুরুত্বপূর্ন ছিলো, কারণ গ্রুপ পর্ব পেরুতে হলে তাদের টপকাতে হবে নেদারল্যান্ড এবং সেনেগালকে।