চীনে তিন কোটি মানুষ লকডাউনে

চীনে করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতি ফের নাজুক হয়ে উঠছে। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটির ১৩টি শহরের তিন কোটি মানুষ লকডাউনে রাখা হয়েছে। আরো কিছু শহরে আংশিক লকডাউন জারি করা হয়েছে।

মহামারির শুরু থেকেই ‘কভিড জিরো’ বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থান নেয় চীন সরকার।

এর সুফলও পেতে শুরু করে দেশটি। অনেকটা স্বাভাবিক জীবনেও ফেরে দেশটি। যদিও মাঝেমধ্যে সংক্রমণ পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ার খবর আসছিল। তবে সম্প্রতি সংক্রমণ পরিস্থিতি একেবারেই পাল্টে যেতে শুরু করে। গতকাল দেশটিতে এক দিনে পাঁচ হাজার ২৮০ জনের করোনা পজিটিভ নিশ্চিত হওয়ার খবর জানানো হয়, যা করোনা শনাক্তের সংখ্যায় আগের দিনের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশটি বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন জারি করা শুরু করে। এরই মধ্যে শেনজেন, সাংহাই, লিজিনসহ ১৩টি শহরে লকডাউন দেওয়া হয়েছে। আরো কিছু শহরে জারি করা হয়েছে আংশিক লকডাউন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সংক্রমণ পরিস্থিতি ও লকডাউনের পরিধি বিবেচনায় নিলে চলমান মহামারির দুই বছরে চীনের বর্তমান পরিস্থিতি সবচেয়ে নেতিবাচক।

সংক্রমণ বাড়তে থাকায় চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দেশের ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে তাদের টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সরকারি হিসাবে, চীনের ষাটোর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর ৮০ শতাংশই দুটি করে টিকা নিয়েছে।

শুধু জনস্বাস্থ্য খাতে নয়, সংকট তৈরি হয়েছে ব্যবসা খাতেও। বেশ কয়েকটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান চীনে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে। টয়োটা, ফোকসভাগেন ও ফক্সকনের মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই তালিকায়। প্রভাব পড়ছে শেয়ারবাজারেও।

জার্মানিতেও বেড়েছে সংক্রমণ : করোনাবিধি শিথিল করার জন্য জার্মান সরকার যখন প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই মিলল সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর।

জার্মানির রবার্ট কচ ইনস্টিটিউট গতকাল জানায়, গত সাত দিনে দেশটিতে এক লাখ ৯৮ হাজার ৮৮৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আগের সাত দিনের তুলনায় সংখ্যা ৪২ হাজার বেশি।

সংক্রমণ বাড়লেও সরকার আর দেশজুড়ে স্বাস্থ্যবিধি কঠোর করার পক্ষে নয়। এ ব্যাপারে সরকারের যুক্তি, মহামারির কারণে স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে সংক্রমণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে হটস্পটগুলোয় প্রতিরোধব্যবস্থা জোরদার করার পক্ষে রয়েছে সরকার।