ঈদকে সামনে রেখে লাগামহীন বাজার

গেলো কয়েকদিনের লকডাউন, বৃষ্টি ও আগাম বন্যার অজুহাত দিয়ে নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে সবজি, মাছ, চালের দাম বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সবজি, মসলা ও চাল পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলে উল্টো এসবের দাম বেড়েছে।

কুরবানির ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বাজারে মসলাও বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্য মূল্য তালিকায় দেখা গেছে, প্রতি কেজি মাঝারি মানের চাল গত সপ্তাহের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

No description available.

সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি তেজপাতার দাম ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ, জিরা ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ, আমদানি করা আদা ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, আমদানি করা রসুন ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। কেজিতে ছোট এলাচ ৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি হলুদ ২৯ দশমিক ৪১ শতাংশ ও ধনে ২ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর কাওরানবাজার, নতুনবাজার, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ির বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

No description available.

বাজারে প্রতি কেজি চালে দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। দাম বেড়ে বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, পাইজাম প্রতি কেজি ৫০ টাকা, নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৬৬ থেকে ৭০ টাকা। তবে পোলাওয়ের চাল আগের দামেই ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

No description available.

চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মালিবাগের ভাই ভাই স্টোরের খুচরা ব্যবসায়ি খালেদ জানান, সর্বশেষ গত দুই সপ্তাহ আগে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। তবে গত সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা ও সরু চালের দাম নতুন করে না বাড়লেও মাঝারি মানের চালের দাম নতুন করে বেড়েছে। তবে মোটা ও সরু চাল গত ২ সপ্তাহ ধরে বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, তেলাপিয়া মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, রুই মাছ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, মৃগেল ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা এবং রূপচাঁদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ১০০০ টাকা

No description available.

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন (লম্বা) ৬০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা। এসব বাজারে আলুর দাম ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের দাম কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। চাল কুমড়া পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা, কচুর গাট ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্চে ৪০ টাকা কেজি। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। শসার দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। কাকরোল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, লেবুর হালি ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

No description available.

মাংসের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। লেয়ার মুরগি ২৩০-২৪০ টাকা আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। মুরগির পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।

No description available.

নতুনবাজারের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জহিরুল হক বলেন, আমার মা, স্ত্রী ও ছেলেমেয়েসহ ৫ জন সদস্য। করোনায় বেতন ঠিকমতো হচ্ছে না। এর মধ্যে চালসহ বেশ কয়েকটি পণ্যই বিক্রেতারা বাড়তি দরে বিক্রি করছেন। এ অবস্থায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।