এন্ড্রু কিশোর প্লেব্যাকে অপরিহার্য এক শিল্পী। যেকোনো ধরনের গান গাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল তাঁর। রোমান্টিক, মেলোডিয়াস, বিরহী, ফোক, চটুল—সব ধরনের গানেই ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। সব ফেলে ২০২০ সালের ৬ জুলাই চলে গেলেন না–ফেরার দেশে
গানে গানে জানিয়ে গিয়েছিলেন ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, রইব না আর বেশি দিন তোদের মাঝারে।’ মহামারির কারণে তাঁর কাছের মানুষ, শুভানুধ্যায়ী অনেকেই শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ নিতে পারেননি। তাঁকে যোগ্য সম্মানটা আমরা জানাতে পারিনি। সেই গ্লানিবোধ আমাদের অনেকেরই আছে।
এন্ড্রু কিশোর প্লেব্যাকে অপরিহার্য এক শিল্পী। যেকোনো ধরনের গান গাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল তাঁর। রোমান্টিক, মেলোডিয়াস, বিরহী, ফোক, চটুল—সব ধরনের গানেই ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। পর্দায় যেকোনো নায়কের ঠোঁটেই তাঁর গান মানিয়ে যেত। সেকালের রাজ্জাক, জাফর ইকবাল থেকে একালের সালমান শাহ, মান্না, রিয়াজ, ফেরদৌস, শাকিব খান—সবার জন্যই তিনি গেয়েছেন। এত কিছু বলার কারণ, গত এক বছরে চলচ্চিত্রের গানে এন্ড্রু কিশোরের শূন্যতা ভীষণভাবে অনুভব করেছি। অনেক গানই সৃষ্টির পর মনে হয়েছে, এই গান শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের। সেই গান গাওয়ানোর জন্য বিকল্প কোনো শিল্পী পাওয়া যায়নি।’
আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, এই চোখ দুটো মাটি খেয়ো না’, কিংবা ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলে ঠুস’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’—কত গান—তাঁর কণ্ঠ যেসব গানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তাঁর কণ্ঠ সব শ্রেণির শ্রোতার হৃদয়ে অনুরণন তুলেছে। সমৃদ্ধ করেছে বাংলা গানের ভান্ডার।
সেই ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে মেইল ট্রেন ছবির ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই’ গানে প্লেব্যাক শুরু। সেই কণ্ঠের ট্রেন থেমেছিল গত বছরের ৬ জুলাই। একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছিল সেদিন। আমাদের সংগীতে অনেক শিল্পীই আসবেন। গাইবেন। কিন্তু দ্বিতীয় এন্ড্রু কিশোরকে পাব না আমরা।