ভারতের পূর্ব লাদাখের গোগরা-হট স্প্রিংসে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) জুড়ে অবস্থান করা চীনা সেনাবাহিনী প্রায় তিন কিলোমিটার পিছিয়ে গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। অন্যদিকে ভারতের সেনারাও অনেকটা সরে এসেছে ওই অঞ্চল থেকে।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নতুন স্যাটেলাইট চিত্রের কথা উল্লেখ্য করে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
মার্কিন গবেষণা সংস্থা ম্যাক্সারের নতুন স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, চীনের সেনাবাহিনী ২০২০ সালে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে একটি বড় বিল্ডিং তৈরি করেছিল। যা পরিখা দ্বারা বেষ্টিত ছিল এবং সেখানে নানা সামরিক সরঞ্জাম ছিল।
কিন্তু চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বরের একটি চিত্রে দেখা যায়, চীনের তৈরি বিল্ডিংটি সেখান সেই এবং সেখানে কিছু ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার শর্ত মেনে এ পদক্ষেপ নিয়েছে চীন।
আরেকটি স্যাটেলাইট চিত্র দেখা গেছে, লাদাখ অঞ্চলে নিয়ে উভয় পক্ষের যে চুক্তি ছিল, চীন সে অনুযায়ী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সরে গেছে।
কিন্তু লাদাখের স্থানীয় কাউন্সিলররা বলেছেন, ওই চুক্তির অংশ হিসবে ভারতীয় সেনাবাহিনীও নিজ ভূখণ্ড থেকে তাদের নিজস্ব পোস্টগুলো সরিয়ে নিয়েছে। যদিও এ বিষয়ে নয়াদিল্লির সেনা কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি।
ভারতের চুশুলের কাউন্সিলর কনচোক স্ট্যানজিন বলেছেন, আমাদের সেনারা কেবল প্যাট্রোল পয়েন্ট ১৫ (পিপি-১৫) নয়, প্যাট্রোল পয়েন্ট ১৬ থেকেও ফিরে গেছে, যা প্রায় ৫০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এটা একটা বড় ধাক্কা। আমাদের চারণভূমি এখন একটি বাফার জোনে পরিণত হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ১৭ জুলাই কোর কমান্ডার পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৬তম দফা আলোচনার পরে ভারত ও চীনা সেনাবাহিনীর মধ্যে গোগরা সমঝোতা হয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, চুক্তি অনুযায়ী উভয় পক্ষের দ্বারা ওই এলাকায় তৈরি করা সমস্ত অস্থায়ী কাঠামো এবং অন্যান্য অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হবে এবং পারস্পরিকভাবে তা যাচাই করা হবে। উভয় পক্ষই তাদের নিজ এলাকা পুনরুদ্ধার করবে। নতুন স্যাটেলাইট চিত্রগুলো এসব নিশ্চিত বিষয় করেছে।
তবে ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনা সেনাবাহিনী গোগরা সমভূমিতে ভারতীয় টহল অঞ্চলগুলো অবরুদ্ধ করে চলেছে। বিচ্ছিন্ন আলোচনার ফলে এ বিষয়ে এখনও অগ্রগতি হয়নি।