All corona patients admitted to Ramek need oxygen

‘করোনা কিংবা উপসর্গে যেসব রোগীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে, তাদের সবার অক্সিজেন লাগছে। এই হাসপাতালের আটটি ওয়ার্ডে পাইপলাইনের মাধ্যমে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে, ওয়ার্ডগুলো বর্তমানে রোগীতে ঠাসা। ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দার বিছানা পেতে করোনা রোগী রাখার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বেড ছাড়া রোগীদের কীভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করা যায় তা নিয়েও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘করোনার প্রথম ঢেউয়ে সব রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হতো না। কিন্তু এখন ভর্তির সময়ই শতভাগ রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। প্রতিদিন এখানে ৪ হাজার লিটারের মতো অক্সিজেন লাগছে। অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু রোগী রাখার জায়গা হচ্ছে না। তবে দু-এক দিন পর অনেক রোগীর অক্সিজেন লাগছে না। কিন্তু শুরুতেই যে সবার অক্সিজেন লাগছে এটা সত্যিই ভীতিকর।’

উল্লেখ্য, রামেক হাসপাতালের ১ হাজার ২০০ শয্যার মধ্যে ২৩২টি করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পাওয়া হিসাবে আটটি করোনা ওয়ার্ডে ২২০ রোগী ছিলেন। আগের দিন ভর্তি হন ২১৬ জন। অথচ গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে এ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে এক দিনে সর্বোচ্চ রোগী ছিল ১৩৬ জন।

 

সংশ্লিষ্ট চিকিত্সকরা বলছেন, শুধু করোনা পজিটিভ হলেই আগত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। যাদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন কম, শুধু তাদেরই ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। অন্যদের বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিত্সার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালে ভর্তির শুরুতেই অক্সিজেন দিতে দেখে রোগীর স্বজনরা উদ্বিগ্ন হচ্ছেন। উন্নত চিকিত্সার আশায় স্বজনরা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) সিরিয়াল দিচ্ছেন। কিন্তু আইসিইউ বেড কখনো ফাঁকা থাকছেই না।

রাজশাহী সড়ক ও জনপথ বিভাগের মালি রানা জানান, তিনদিন অপেক্ষার পর তার মা আইসিইউ পান। ঐ তিন দিন তিনি প্রায় ২৫ হাজার টাকার ওষুধ-ইনজেকশন কিনেছেন। তবে আইসিইউ পেলেও তিন দিন পর গত সোমবার দিবাগত রাতে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তার মা মারা যান।

উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, রামেক হাসপাতালে আরো পাঁচটা ভেন্টিলেটর পাওয়া গেলে পাঁচটা আইসিইউ বেড বাড়ানো যাবে। এ কারণে ঢাকায় পাঁচটি ভেন্টিলেটরের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। রোগীর চাপে বেড শেষ হয়ে এসেছে। এ কারণে এক নম্বর ওয়ার্ডও করোনা রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা আছে।

পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, শুধু ওয়ার্ড বাড়িয়েই রোগীর চাপ সামাল দেওয়া যাবে না। বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিত্সার জন্য আরো চিকিত্সক প্রয়োজন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে চিঠি দিয়েছে। বুধবার পর্যন্ত সাড়া পাননি। চিকিৎসক না পেলে চিকিত্সাসেবা ব্যাহত হতে পারে।