রাশিয়ার টানা গোলা, বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিপর্যস্ত ইউক্রেনে সাময়িক স্বস্তির অবকাশও মিলছে না। আজ রবিবার দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর মারিউপোল থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেওয়ার নতুন চেষ্টাও বিফলে গেছে। স্থানীয় নগর পরিষদ বলেছে, রাশিয়ার অব্যাহত গোলাগুলির কারণে তা সম্ভব হয়নি। দেশের অন্যান্য স্থানেও রাশিয়ার বাহিনী কমবেশি সমানতালে গোলা, ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
আক্রান্ত শহরগুলোর মানবিক পরিস্থিতি ক্রমশ হয়ে উঠছে দুর্বিষহ।
সাধারণ বাসিন্দাদের মারিউপোলসহ দুটি শহর ছাড়ার জন্য শনিবার প্রথম সাময়িক যুদ্ধবিরতি ও ‘মানবিক করিডোরের’ কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। সে পরিকল্পনাও শহর ছাড়ার আরেকটি পথে রাশিয়ার সেনাদের হামলার কারণে বাতিল করা হয়। আন্তর্জাতিক রেডক্রস বলেছে, দুদিনের ব্যর্থ প্রচেষ্টা সংঘাতের সংশ্লিষ্ট পক্ষদুটোর মধ্যে ‘একটি বিশদ ও কার্যকর মতৈক্যের অভাবকেই’ তুলে ধরেছে।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কোর দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তার দেশের সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ হবে না। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি জনগণকে রাশিয়ার ‘প্রথম ধাক্কা সামলানোর পর’ এবার রুখে দাঁড়ানোর জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি জেলেনস্কির সহায়তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র পোল্যান্ডের সঙ্গে মিলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় সহায়তা করতে সোভিয়েত আমলের কিছু যুদ্ধবিমান সরবরাহ করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরইসি) অবরুদ্ধ গতকাল স্থানীয় সময় দুপুরে মারিউপোল থেকে দুই লাখ লোককে সরিয়ে নেওয়া শুরু করার আশা করেছিল। রেডক্রস বলেছে, তাদের দলগুলো যুদ্ধে সাময়িক বিরতির মধ্যে মারিউপোল থেকে জাপোরিঝিয়া পর্যন্ত পথ দিয়ে নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার পথ খোলা শুরু করেছিল। কিন্তু অচিরেই আবার লড়াই শুরু হয়ে যায়। আইসিআরইসি বলছে, রাশিয়া ও ইউক্রেন নীতিগতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু কীভাবে কাজটি করা হবে তার খুঁটিনাটি নিয়ে একমত হতে তারা ব্যর্থ হয়।
আন্তর্জাতিক দাতব্য সংগঠনটি বলেছে, তারা দুপক্ষের মধ্যে সংলাপে সহায়তা করছিল। কিন্তু তারা দুইপক্ষের মধ্যে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা বা এর বাস্তবায়নের নিশ্চয়তাদানকারী’ হতে পারে না। এটি আরো বলেছে, আগামীতে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতিতে সহায়তা করার জন্য তাদের দলগুলো শহরে রয়ে গেছে।