মৎস্যকন্যার রূপকথাকে অনুপ্রাণিত করা প্রাণী ডুগংকে চীনে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর অন্য কিছু জায়গায় এখনও এ প্রাণীর অস্তিত্ব থাকলেও, হুমকির মুখে রয়েছে তারাও।
গত পাঁচ বছরে চীনের উপকূলে মাত্র তিনজন মানুষ একটি ডুগং দেখেছেন বলে জানা গেছে।
মহাসাগরের সবচেয়ে শান্ত বিশালাকার প্রাণী হিসেবে পরিচিত ডুগং। এর ধীর, স্বচ্ছন্দ স্বভাবের কারণে এটি সহজেই মৎস্যশিকারি ও জাহাজ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বলে ধারণা করা হয়।
লন্ডন জুওলজিক্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানী অধ্যাপক স্যামুয়েল টার্ভি বলেন, চীনে ডুগং বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ঘটনা একটি অপূরণীয় ক্ষতি।
চীনের কোথায় কোথায় ডুগংয়ের অস্তিত্ব ছিল তা নিয়ে ঐতিহাসিক নথিপত্র পর্যালোচনা করেছেন লন্ডন জুওলজিক্যাল সোসাইটি ও চাইনিজ একাডেমী অব সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা। ২০০০ সালের পর চীনে বিজ্ঞানীরা ডুগংয়ের দেখা পাননি বলে প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
আরও নিশ্চিত হতে উপকূলে বসবাসকারী ৭৮৮ জনের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। তারা জানান, গত পাঁচ বছরের মাত্র একটি ডুগংকে তিনবার দেখা গেছে।
লন্ডন জুওলজিক্যাল সোসাইটির গবেষক হাইডি মা জানিয়েছেন, এর ফলে প্রাণীটিকে ‘কার্যত বিলুপ্ত’ ঘোষণা করা হয়েছে, কেননা তারা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আর সক্ষম নয়।
ডুগং সাগরের একটি অনন্য প্রাণী। প্রায় পাঁচশ’ কেজি ওজনের এই প্রাণীটি একমাত্র সামুদ্রিক উদ্ভিদভোজী স্তন্যপায়ী প্রাণী।
এর শান্ত স্বভাবের কারণে অনেকেই বিশ্বাস করেন, চীনা রূপকথার মৎস্যকন্যা ও সাইরেন ডুগং থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছে।
তবে, বিংশ শতাব্দীতে এর চামড়া, মাংস ও হাড়ের জন্য এটিকে শিকার করতে শুরু করে শিকারিরা। এর সংখ্যা কমতে শুরু করলে ১৯৮৮ সালে চীনের স্টেট কাউন্সিল একে জাতীয় সংরক্ষিত প্রাণী ঘোষণা করে।
ভারত মহাসাগর ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরসহ বিশ্বের ৮৭টি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে এ প্রাণীর দেখা পাওয়া গেলেও, আন্তর্জাতিকভাবে একে বিপন্ন প্রজাতি ঘোষণা করা হয়েছে।