ভোট বর্জনে লিফলেট বিলি, বিএনপির মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ

বরিশালে নাগরিকদের নির্বাচন বর্জন করার আহ্বানে ডাকা বিএনপির মিছিলে বেধড়ক লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বুধবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর সদর রোড অশ্বিনী কুমার হলসংলগ্ন বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় জেলা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়কসহ ৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে একই কর্মসূচি পালন করার সময় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ১০, গাইবান্ধায় ছাত্রদল ও পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক জামায়াত নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন।

বরিশালের আদালতপাড়ায় ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা সকাল ১০টার দিকে লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে তারা আদালতপাড়া থেকে মূল সড়কে যান। এর পর মিছিল নিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।

এতে বক্তৃতা করেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, সদস্য আবু নাসের রহমত উল্লাহ, দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান, সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহীন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা আবারও মিছিল নিয়ে সড়কে ওঠার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আকন কুদ্দুস, আবু নাসের রহমত উল্লাহ, হাফিজ আহমেদ বাবলু, সাহিদা বেগমসহ ১০ জন আহত হন।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, অনুমতি না নিয়ে কর্মসূচির নামে বিএনপি নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ তৈরি করেন। এ সময় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি এ টি এম আরিছুল হক।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারে সকালে লিফলেট বিতরণ করার সময় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন– আলাউদ্দিন, মোমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ দিনাজ, মাঈন উদ্দিন টিপু, ফজলুল করিম, শরিফ মাহমুদ, ইকবাল হোসেন, অলি উল্লাহ ও মো. সাহেদ।
মিরসরাই থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, নির্বাচন বানচাল করতে লিফলেট বিতরণ, মিছিল ও গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়ার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গাইবান্ধার দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির আবুল বাশার বসুনিয়াকে (৪৩) গতকাল দুপুরে টেপ্রীগঞ্জ বাজার এলাকায় নির্বাচন বর্জনের লিফলেট বিতরণের সময় গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছেন থানার ওসি ইফতেখারুল মোকাদ্দেম। তিনি আরও জানান, আবুল বাশারকে পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

তবে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি কাজী আবদুল হালিম বলেছেন, বুধবার লিফলেট বিতরণের কোনো কর্মসূচি ছিল না। একটি জানাজা নামাজ থেকে ফেরার পথে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে গাইবান্ধা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি খন্দকার জাকারিয়া জিমকে গতকাল দুপুরে শহরের পশ্চিমপাড়ার বাসা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য ও জিমের ছোট ভাই খন্দকার আলামিন।

সদর থানার ওসি মাসুদ রানা জানান, নাশকতার মামলায় খন্দকার জাকারিয়া জিমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন বরিশাল ব্যুরো, মিরসরাই (চট্টগ্রাম), গাইবান্ধা প্রতিনিধি ও দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) সংবাদদাতা]