বিতর্কিত সীমান্ত এলাকাগুলোতে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে চীন-ভারত, এ নিয়ে রোজই বাড়ছে উত্তেজনা। এরইমধ্যে পূর্ব লাদাখের ৬৫টি নজরদারি কেন্দ্রের (পেট্রোলিং পয়েন্ট বা পিপি) মধ্যে ২৬টি কেন্দ্র ভারতের হাতছাড়া হয়েছে। সম্প্রতি ভারতেরই এক গবেষণাপত্রে উঠে এলো এমন তথ্য।
সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানায়, গত সপ্তাহের দিল্লির বার্ষিক পুলিশ বৈঠকে এই গবেষণাপত্র জমা দেওয়া হয়। সেনা জওয়ানদের ‘অনিয়মিত’ টহলদারির কারণেই এই নজরদারি কেন্দ্রগুলো ভারতের হাতছাড়া হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, বর্তমানে, কারাকোরাম পাস থেকে চুমুর পর্যন্ত ৬৫টি পিপি রয়েছে যেগুলোতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর টহলদারি চলার কথা। কিন্তু ৬৫টি পিপি’র মধ্যে ২৬টিতে নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো নজরদারি না থাকার কারণে সেগুলো ভারতের হাতছাড়া হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে ভারতীয় জওয়ান বা সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি, ফলে এই অঞ্চলগুলো পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) দখলে নিয়েছে।
আনন্দবাজার বলছে, চীন এভাবে ইঞ্চি ইঞ্চি করে ভারতের জমি দখল করছে এবং পিএলএ’র এই কৌশল ‘সালামি স্লাইসিং’ নামে পরিচিত বলেও গবেষণাপত্রে উল্লেখ রয়েছে।
গেলো বছরের ২২ ডিসেম্বরের রিপোর্ট অনুযায়ী, পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর কমপক্ষে ৩০ টি পিপিতে ভারতীয় জওয়ানরা আর টহল দিচ্ছে না। এই পয়েন্টগুলোতে ২০২০ সালের এপ্রিল-মে পর্যন্ত নিয়মিত টহল দেওয়া হত। সেই সময় পূর্ব লাদাখের এলএসির কাছাকাছি সেনা জমায়েত শুরু করেছিল চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)।
অন্যদিকে ২০২০ সালের ১৫ জুন পূর্ব লাদাখে পিএলএ’র সঙ্গে ভারতীয় সেনার সংঘাতের পর ওই কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের হাতছাড়া হওয়া কেন্দ্রগুলোতে অত্যাধুনিক ক্যামেরা লাগিয়ে নজরদারি চালানো শুরু করেছিল পিএলএ।
যদিও ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগের দাবি, কোনো এলাকা হাতছাড়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ৭০’এর দশক থেকে সীমান্ত নিয়ে চীন-ভারতের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। পূর্ব লাদাখের একাধিক অঞ্চলকে নিজেদের বলে দাবি করছে আসছে উভয় দেশ।