ছোট ঋণের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত খেলাপি থাকলে মামলা ছাড়াই তা অবলোপন করা যাবে বলে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতোদিন দুই লাখ টাকার খেলাপি ঋণ কোনো প্রকার মামলা ছাড়াই অবলোপনের সুযোগ ছিল।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোতে পাঠানো সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ‘কৃষি এবং সিএমএসএমই ( কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র, মাঝারি আকারের উদ্যোক্তা) ঋণসহ অন্যান্য খাতের ঋণ/বিনিয়োগ অবলোপনে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে মামলাযোগ্য না হলে পাঁচ লাখ টাকা আদালতে মামলা দায়ের ব্যতিরেকে অবলোপন করা যাবে’।
এর ব্যাখ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, খেলাপির তালিকায় থাকা ক্ষুদ্র অংকের ঋণের মামলা খরচ, ঋণস্থিতি বিবেচনায় প্রায়শই অধিক হয় বিধায় আবশ্যক না হলে মামলা ছাড়াই অবলোপন করা যাবে।
এর আগে ২০১৯ সালে খেলাপি ঋণ অবলোপনের জন্য একটি নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, দুই লাখ টাকার বেশি খেলাপির বিপরীতে মামলা ছাড়া ঋণ অবলোপন করা যাবে না। ঋণ অবলোপনের পূর্বে অবশ্যই অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ অনুযায়ী মামলা দায়ের করতে হবে।
তবে নতুন এ সিদ্ধান্ত ছাড়া ঋণ অবলোপনের অন্যান্য শর্ত একই রেখে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আর গত জুনে আরেক সার্কুলার দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দিয়ে বলেছিল, জাল-জালিয়াতি বা প্রতারণা ও অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিতরণকৃত ঋণ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পর তা নিষ্পত্তি হলেই কেবল অবলোপন করা যাবে।
২০০৩ সাল থেকে ব্যাংকগুলোকে ঋণ অবলোপনের সুযোগ দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
আর ২০০৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত অবলোপন করা হয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ, যা ব্যাংক খাতে খেলাপি হওয়ার ঋণের ৫১ শতাংশের মত।
কিছু অর্থ আদায়ের পর অবলোপন করা ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকায়। গত জুন মাসের পর এর পরিমাণ আরও বেড়েছে।
আগে পাঁচ বছর না হওয়া পর্যন্ত কোনো ঋণকে অবলোপন করা যেত না। ২০১৯ সালে সে নিয়ম পরিবর্তন করে সময় কমিয়ে তিন বছর করা হয়।