এএফসি কাপ ফুটবলের গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে বসুন্ধুরা কিংস অল্পের জন বেঁচে গিয়েছে। মালদ্বীপের রাজধানী মাল শহরে অনুষ্ঠিত খেলায় ভারতের ব্যাঙ্গালুরু এফসির বিপক্ষে গোল শূন্য ড্র হয়েছে। ম্যাচের ৭৪ মিনিটে ব্যাঙ্গালুরু এফসির শক্ত আক্রমণে গোলটা প্রায় হয়েই যাচ্ছিল। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি দিয়ে চেক করা হলে কি সিদ্ধান্ত হতো সেটা বলা কঠিন। তবে টিভির পর্দায় রিপ্লেতে মনে হচ্ছিল ক্রসপের নিচে বলটা চুমু খেয়ে গোল লাইনের ভেতরের অংশে পড়েছে।
ব্যাঙ্গালুরু এফসির খেলোয়াড়রা ইন্দোনেশিয়ান রেফারি মুনির আলকাতিরির কাছে গোলের দাবী জানায়। তেড়ে ফুড়ে যাওয়া সুনীলকে ঠেকানোই কঠিন ছিল। খেলা শেষ হওয়ার পর ব্যাঙ্গালুরু এফসির অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী রেফারির কাছে গিয়েছিলেন। হয়ত এই ঘটনা নিয়ে বলতে। তবে বসুন্ধরার ভাগ্য ভালো, বলটা আর এক সুতা ভেতরে পড়লে গোলের সিদ্ধান্ত এড়িয়ে যেতে পারতেন না রেফারি কিংবা স্বদেশী সহকারি রেফারি। গোল শূন্য হলেও বসুন্ধরার জন্য এটাই অনেক বড় প্রাপ্তি। কারণ ব্যাঙ্গালুরু এফসি আগের ম্যাচে মোহন বাগানের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল। তাদের কাছে বসুন্ধরার বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল অনেকটাই বাঁচা মরার লড়াই। আর বসুন্ধরা তাদের প্রথম খেলায় মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টসের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পেয়ে একটা সুবিধাজনক স্থানে ছিল। বসুন্ধরা গ্রুপের শেষ ম্যাচ খেলবে মঙ্গলবার, মোহনবাগানের বিপক্ষে।খেলা শেষে গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো যা বললেন তাতে মনে হলো ম্যাচটা ড্র করার জন্যই তারা মাঠে নেমে ছিলেন। হেরে গেলে সম্ভাবনা কমে আসত। আর এখন জয় না পেলেও প্রদীপটা জ্বলবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। জিকো বললেন,‘আমরা ডিফেন্স করে খেলেছি।’ অধিনায়ক তপু বর্মন বললেন,‘মোহনবাগানের বিপক্ষে আমাদের ডু অর ডাই ম্যাচ হবে।’
বসুন্ধরা কিংসের মূল শক্তিটাই ছিল আক্রমণভাগে। ব্রাজিলিয়ান দুই ফুটবলার রবসন, জনাথন আর্জেন্টিনার রাউল বেসেরা দুর্দান্ত হলেও ব্যাঙ্গালুরু এফসি এই তিন ফুটবলারকে নিচে নেমে আসতে বাধ্য করেছে। স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন পরিস্থিতি দেখেছেন। কতোটা ভয়াবহ হতে পারে। হেরে গেলে সম্ভাবনা নিভু নিভু করত। তিনি ঝুঁকি নিতে চাননি। অন্যদিকে ব্যাঙ্গালুরু এফসির ইতালিয়ান কোচ মার্কো পেজ্জাওলি ছিলেন দুর্দান্ত আক্রমণে। তার সব শক্তি বসুন্ধরার রক্ষণে ঢেলে দিয়েছেন।প্রথমার্ধেই নিশ্চিত হয়ে গেছেন বসুন্ধরার রক্ষণের দুর্বলতা। ইতালিয়ান কোচ চার ফুটবলার পরিবর্তন করে বসুন্ধরার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই আক্রমণ সামাল দিতে গিয়ে তপু বর্মন, সুফিল, তারিক কাজী, বিশ্বনাথ ঘোষ, ইরানী খালেদ শাফি, মাসুক মিয়া জনি, রবসন, জনাথন, রাউল বেসেরা মাঝ মাঠের নিচে নেমে আসে। রক্ষণভাগে শক্তি বাড়াতে আক্রমণভাগের ফুটবলাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে। ব্যাঙ্গালুরু এফসি ১৩টা শট করে বসুন্ধরার গোল মুখে। প্রতিবারই গোলকিপার জিকো বাঁধা হয়ে দাঁড়ান। বসুন্ধরা গোলের সুযোগ পেয়েছিল। দুর্ভাগ্য রবসনের বলটা ব্যাঙ্গালুরু এফসির গোলকিপার গুরপ্রীতি সিং পড়ে গিয়ে ঠেকালেও বল জালে ঢোকার আগে আরেক ডিফেন্ডার এসে বল ফেরালেও বল গোলে ঢুকছিল। আবার গোলকিপার গুরপ্রীতি উঠে গিয়ে গোল ঠেকান। এই গোলটা হয়ে গেলে বসুন্ধরার জন্য দরজা খুলে যাওয়ার সুযোগ এসে যেত।