ক্ষতির আশঙ্কায় চামড়া শিল্প

কোরবানির ঈদের পর লকডাউন নিয়ে শঙ্কিত কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা। সরকারি সিদ্ধান্ত মতে লকডাউনে গার্মেন্টসহ সব ধরনের শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে। যদিও এ সময়ে ট্যানারি, আড়তদার ও মৌসুমি পাইকারি চামড়া বিক্রেতারা কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ করবেন। তবে লকডাউনের কারণে চামড়া সংরক্ষণ ও পরিবহন নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

চামড়া ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে পুনরায় কঠোর লকডাউন শুরু হবে। সরকার লকডাউনে সব ধরনের শিল্প কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কোরবানির দিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ এবং প্রধান মোকাম ও সব ট্যানারি ঢাকায় হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাঁচা চামড়া ঢাকায় পৌঁছাতে হবে। এসব কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে দেশে প্রায় ২৫০টি ট্যানারি ও কয়েক হাজার আড়তদার রয়েছে। কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ কাজে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কর্মচারী জড়িত এবং এ কাজ করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার ঈদের পর কঠোর লকডাউন ঘোষণা করলেও চামড়া শিল্পের বিষয়টি পরিষ্কার করেনি

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চামড়া শিল্প চালু রাখতে তারা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন বলেন, ঈদের পর লকডাউনে চামড়া শিল্প আওতামুক্ত রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা চামড়া সংরক্ষণ কাজ করতে চায়। চামড়া শিল্পকে লকডাউন মুক্ত না রাখলে এই শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন ইত্তেফাককে বলেন, কোরবানির ঈদের পরের সময়টা চামড়া ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এসময়ে কাঁচা চামড়া ট্যানারি মালিক ও আড়তদার সংরক্ষণ করেন। বৃহত্তর স্বার্থে লকডাউন চলাকালীন চামড়া শিল্পকে আওতামুক্ত রাখতে হবে।

এদিকে কোরবানি ঈদ উপলক্ষে ইতিমধ্যে কাঁচা চামড়া সংগ্রহের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন আড়তদারসহ চামড়া শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা। সরকারিভাবে কাঁচা চামড়ার দামও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তবে আড়তদারদের অভিযোগ তারা মূলধন সংকটে আছেন, ব্যাংক ঋণও পান না। উপরন্তু ট্যানারি মালিকদের কাছে কোটি কোটি টাকা অনাদায়ী রয়েছে। ফলে কাঁচা চামড়া সংগ্রহে আড়তদার ব্যবসায়ীরা আর্থিক সংকটে রয়েছে। একাধিক আড়তদার জানান, ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের কাছে ২০১৫ সালের প্রায় ২৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। পরবর্তী বকেয়াসহ টাকার পরিমাণ আরো বেড়েছে। ট্যানারি মালিকরা চামড়া সংগ্রহের জন্য ঋণ সুবিধা পেলেও আড়তদারদের অর্ধেক মূল্য পরিশোধ করে না। চট্টগ্রামে এবার প্রায় ৫ লাখ কাঁচা চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।