‘অবৈধ সরকারের অন্যায় আদেশ মানবেন না’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে বিএনপি নেতারা বলেছেন, অবৈধ সরকারের আর কোনো অন্যায় আদেশ মানবেন না। অন্যায় নির্দেশ শুনে র‌্যাব নিষেধাজ্ঞা পেয়েছে। সময় আছে, সংশোধন হয়ে জনগণের পক্ষে থাকুন। এখন পর্যন্ত যা করেছেন, তা জনগণের বিপক্ষে। জনগণের সরকার ক্ষমতায় এলে সেসব ক্ষমা করবে। কিন্তু আবারও একই কাজ করলে জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।

শনিবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা। সরকারের দুর্নীতি, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে মতিঝিলের পীরজঙ্গী মাজারের সামনে এ জনসমাবেশ হয়। একই দাবিতে এ দিন দেশের ১৮টি জেলা ও মহানগরে কর্মসূচি পালন করেন দলটির নেতাকর্মীরা।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপির একটি সমাবেশেও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়নি। অথচ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, গুলি ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তাঁদের বেতন হয়। কিন্তু তারা একটি দলের হয়ে জনগণের ওপর অত্যাচার করছেন। নেতাকর্মীর উদ্দেশে খন্দকার মোশাররফ বলেন, রাস্তা থেকেই এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। শক্তি আরও দ্বিগুণ করে স্বৈরাচার বিদায় করার প্রস্তুতি নিন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, যারা গুলি করছেন, মনে রাখবেন এই পোশাক সারা জীবন আপনাদের গায়ে থাকবে না। বিগত দিনে অনেকের চাকরি চলে গেছে। তাই গুলি চালানোর সময় ভবিষ্যতের কথা এবং পরিবারের বিষয় চিন্তা করবেন। তিনি বলেন, অধিকারের কথা বলতে গেলে পুলিশের পিটুনি খাচ্ছে মানুষ। দেশের মানুষ ভোটাধিকার আদায়ের জন্য রাস্তায় নামলেই তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। এমনটি বিশ্বের কোনো সভ্য দেশে হয় না। প্রতিবেশী ভারতেও গুলি করা হয় না। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সরকার গুলি চালায়। শিল্পপ্রতিমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ‘সব কথা বলতে গেলে দেখবেন আমার লাশটা রাস্তায় পড়ে থাকবে’।

সমাবেশে বক্তারা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন। তারা বলেন, বিএনপি হাঁটুভাঙা, কোমরভাঙা দল হলে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে এত ভয় কেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, আসলে হাঁটুভাঙা দল আওয়ামী লীগ। তাদের এক পাশে র্যা ব, আরেক পাশে পুলিশকে নিয়ে চলতে হয়।

পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচি উপলক্ষে দুপুরের আগে থেকেই নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন। বেলা আড়াইটায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর সময় পুরো এলাকা ভরে যায়। এ সময় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় জনসমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, কামরুজ্জামান রতন, রকিবুল ইসলাম বকুল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, মহানগর বিএনপির হাবিবুর রশিদ হাবিব, লিটন মাহমুদ, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, কৃষক দলের শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।