Analysts question Metrorail fares being double that of buses

বাসের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া নির্ধারণ করায় যাত্রীরা মেট্রোরেল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, নির্ধারিত ভাড়ায় নিরুৎসাহিত করা হয়েছে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীদের। এবং নিম্নবিত্তের ক্রয় ক্ষমতাকেও বিবেচনায় আনা হয়নি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তারা। যাত্রী পাওয়া না গেলে দিন শেষে লোকসানি প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকতে হবে ডিএমটিসিএলকে।

বিআরটিএ নির্ধারিত বাসের ভাড়া কিলোমিটারে আড়াই টাকা। কিন্তু এই ভাড়া রয়ে গেছে কেবল কাগজে-কলমেই। যাত্রীর পকেট কেটে নেয়া হয় বাস মালিকদের ইচ্ছে মতো। এ বছর ডিসেম্বরে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হওয়ার কথা দেশের প্রথম মেট্রোরেল। ঢাকার একাংশের যাত্রীরা কিছুটা আশায় ছিলেন, মেট্রো আসছে। এতে যাত্রীদের বাধ্য করার প্রবণতা কমবে। কিন্তু সে আকাঙ্ক্ষা হোঁচট খেয়েছে মেট্রোরেলের নির্ধারিত ভাড়ার হারে। যাত্রীরা জানান, কম দূরত্বে যেতে হলে তাদের যে টাকা খরচ করতে হবে তা বাসে হতো না। তাই খুব বেশি আনন্দের কিছুই ঘটবে না।

প্রতি কিলোমিটারে ঢাকা মেট্রোর ভাড়া পাঁচ টাকা। শাহবাগ থেকে কারওয়ান বাজার আসলেও ভাড়া গুনতে হবে বিশ টাকা। প্রতিবেশী ভারতের কলকাতায় যোগাযোগের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম এই মেট্রোরেল। সেখানে কিলোমিটার প্রতি ভাড়া দেড় থেকে আড়াই টাকা। সর্বনিম্ন ভাড়া ৬ টাকা। লাভের মুখ দেখেছিল দিল্লি মেট্রো; যেখানে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া তিন টাকার কম।

পরিবহন বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. সামসুল হক বলেন, নিয়োগের রিটার্ন আসে যাত্রীর ভাড়া থেকে। বাইরে যাত্রী পাওয়া যায় না; সেখানে লোকসংখ্যা কম। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অমিত সম্ভাবনা। রাইডারশিপ বাড়লে কিন্তু ভাড়া কমিয়ে আনা যায়। বিজ্ঞান ও অর্থনীতি বলে, উপযোগীতা যদি বাড়াতে চাই তবে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।

বিশ্বজুড়ে চলমান মেট্রোরেলে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হংকং মেট্রো। সিঙ্গাপুর মেট্রোরেলও লোকসানের কলঙ্ক মুছে নিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর কোথাও যাত্রীর আর্থিক সক্ষমতার বাইরে চাপ দেয়া হয়নি। বরং, সেবা বাড়িয়ে যাত্রীর কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। অধ্যাপক ড. সামসুল হক বলেন, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে রাইডারশিপকে আকর্ষণীয় করে ভাড়া কমিয়ে, স্টেশনের আশেপাশে নন অপারেটিং বিনিয়োগ করে লাভজনক করে ফেলা হয়েছে।

তবে কারো কারো মত, বাস্তবায়িত মেট্রোর সুবিধা ভোগ করবে ঢাকাবাসীর দশভাগেরও কম মানুষ। মেট্রোতে ভাড়া কমানো হলে ভর্তুকির টাকা তুলতে ভ্যাট-ট্যাক্সে ভর করতে হবে। পরিবহন বিশ্লেষক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ভাড়া যদি কমাতে হয় তবে সরকারকে আরও ভর্তুকি দিতে হবে। তখন পাবলিক প্রাইসিং করতে হবে। অর্থাৎ, যারা মেট্রোরেল ব্যবহার করবে না, তাদের উপার্জনের একটা অংশও এখানে ঢুকে যাবে। কাজেই, প্রাইভেট প্রাইসিংকেই এখানে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে মনে করি।

image_pdfimage_print