বলিউডে তিনি পরিচিত ‘খিলাড়ি’ নামে। তার জীবনটাই যেন একটা সিনেমার চিত্রনাট্য। অভিনয়ে কাজ করতে করতে যিনি নিজেই হয়েছেন একজন প্রতিষ্ঠান। তিনি অক্ষয় কুমার, বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা। আজ জনপ্রিয় এ অভিনেতার ৫৫তম জন্মদিন।
তার প্রকৃত নাম রাজিব হরি ওম ভাটিয়া। ১৯৬৭ সালে পাঞ্জাবের অমৃতসরে জন্মগ্রহণ করেন রাজিব। ছোটবেলায় নাচ ও মার্শাল আর্টে ভীষণ দক্ষ ছিলেন। থাইল্যান্ডে উচ্চতর প্রশিক্ষণও নেন। বেশ কিছুদিন বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় চাকরির পর মুম্বাইয়ে মার্শাল আর্টের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। সেখানেই এক ছাত্রের বাবা তাঁকে অভিনয়ে আসার প্রস্তাব দেন।
নব্বই দশকে মূলত অ্যাকশন হিরো হিসেবে উত্থান অক্ষয় কুমারের। তার প্রথম কাজ ছিল রাখী গুলজার ও শান্তিপ্রিয়ার বিপরীতে ‘সুগন্ধ’ সিনেমা। একই বছর কিশোর ব্যস পরিচালিত ‘ড্যান্সার’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। সে সময় ব্যাপক সমালোচিত হয় সিনেমাটি। পরের বছর আব্বাস-মাস্তানের ‘খিলাড়ি’ কে তার প্রথম সাফল্য হিসেবে গণ্য হয়।
১৯৯২ সালে তার সিনেমা ‘দিদার’ ব্যর্থ হয় বক্সঅফিসে। ১৯৯৩ সালে দিল কী বাজী, কায়দাকানুন, ওয়াক্ত হামারা হ্যায়সহ প্রায় সব চলচ্চিত্রই বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়। ১৯৯৪ সালে ম্যাঁয় খিলাড়ি তু আনাড়ি, ও মোহরা সিনেমায় পুলিশের ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি কামব্যাক করেন। সে বছর সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্রের একটি ছিল মোহরা।
একই বছর যশ চোপড়ার ইয়ে দিল্লাগী সিনেমায় কাজলের বিপরীতে অভিনয় করে ফিল্মফেয়ার মনোনয়ন লাভ করেন অক্ষয়। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। নব্বই দশকের পর অ্যাকশন থেকে নিজেকে কমেডি ঘরানার কিং হিসেবে উপস্থাপন করেন তিনি। ২৯ বছরের ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত অভিনয় করেছেন শতাধিক সিনেমায়।
তবে বলা হয়ে থাকে, অক্ষয় নতুনরূপে হাজির হন ২০১২ সালের ‘ওএমজি: ও মাই গড’-এর পর থেকে। নীরাজ পান্ডের ‘স্পেশাল ছাব্বিশ’, ‘বেবি’র কল্যাণে পাওয়া যায় নতুন এক অক্ষয়কে। বদলে যাওয়ার পর তাকে অভিনেতা হিসেবে দেখা যায় ‘এয়ারলিফট’, ‘রুস্তম’, ‘জলি এলএলবি টু’, ‘প্যাডম্যান’ এর মতো সিনেমায়। ‘রুস্তম’-এর কল্যাণে প্রথমবারের মতো ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া ২০০৯ সালে পান দেশটির সর্বোচ্চ সম্মাননা পদ্মশ্রী পুরস্কার।
২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অক্ষয় অভিনীত বেশিরভাগ সিনেমাই ১০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করে। যা বলিউডে একক অভিনেতা হিসেবে রেকর্ড। তবে চলতি বছর ‘বচ্চন পান্ডে’, ‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’ ও ‘রক্ষাবন্ধন’সহ একের পর এক সিনেমা ফ্লপ। এক সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যর্থতা অবশ্য মাথা পেতে নিয়েছেন অক্ষয়। তবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শিগগিরই ফিরবেন স্বমহিমায়। হ্যাপি বার্থডে অক্ষয় কুমার।