পর্যটকদের পথ চেনান এই বম তরুণ

এমনিতে ঢাকায় খুব একটা আসা হয় না মুনথাং বমের। পাহাড়ের মানুষ, পাহাড়েই প্রশান্তি পান। তারপরও কোনো কারণে রাজধানীতে এলে মধুর এক বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাঁকে। কার বাসা রেখে কার বাসায় উঠবেন, কার সঙ্গে একবেলা খাবেন সে সময় দেওয়া, কার সঙ্গে কখন কোথায় দেখা করবেন তা জানানো ইত্যাদি।

যাঁদের নিয়ে মুনথাংয়ের এমন বিড়ম্বনা, তাঁরা কেউ তাঁর আত্মীয় নন, তবে আপনজন। বান্দরবানের রুমায় পর্যটকদের গাইড হিসেবে কাজ করতে গিয়ে হাজারো মানুষকে তিনি এভাবেই ভালোবাসার বাঁধনে বেঁধেছেন।

মুনথাংয়ের কণ্ঠে বিনয় ঝরে পড়ে, ‘পর্যটকদের আমি আমার আত্মীয় হিসেবে নিই। গাইড হিসেবে সর্বোচ্চ সেবাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। হয়তো আমার প্রতি অনেকে সন্তুষ্ট হন বলেই ভালোবাসেন।’

প্রতি সপ্তাহেই কোনো কোনো গন্তব্যে ছোটেন যান মুনথাং। কখনো তাঁর সঙ্গে সঙ্গী হন ১৫ জন, কখনো ৩০ জন। রুমা বাজার থেকে বগালেক, কেওক্রাডং, রিজুক ঝরনাসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অনুমোদিত এলাকায় ভ্রমণপিপাসুদের পথ দেখান তিনি। শুধু পথ দেখানো নয়, পর্যটকদের জন্য বাজারসদাই থেকে থাকা-খাওয়ার যাবতীয় বন্দোবস্ত করেন এই বম তরুণ।

যেভাবে গাইড হলেন

মুনথাং বম তখন নবম শ্রেণিতে পড়েন। বেথেল পাড়ায় তাঁদের বাড়ি। পাহাড়, ঝিরি আর নদী মাড়িয়ে বাড়ি থেকে বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদর ঘণ্টাখানেকের পথ। সদরের উচ্চবিদ্যালয়ে রোজ আসতে-যেতে এই ‘সামান্য’ দূরত্ব রোজ তাঁকে পাড়ি দিতে হয়। সামান্য এ কারণে, মুনথাংয়ের সহপাঠীদের অনেকে আসেন তিন-চার ঘণ্টার পথ পেরিয়ে।

গত ফেব্রুয়ারিতে নিকটজনের চিকিৎসা করাতে ঢাকা এসেছিলেন মুনথাং বম। তখনই তাঁর সঙ্গে দেখা, আলাপ। জানতে চাইলাম, ‘এত এত মানুষের আপন হয়ে উঠলেন কী করে?’