জলবিদ্যুৎ আমদানির স্বার্থে ব্রহ্মপুত্র-যমুনাকে বিসর্জন নয়

ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের করিডর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্ব থেকে পশ্চিম অঞ্চলে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়ার গ্রিডলাইনের রুটের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে দুই দেশের যৌথ পরিচালনা কমিটি (জেএসসি)। জ্বালানি খাতে ২০১৪ সালে ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতাবিষয়ক যৌথ পরিচালনা কমিটির (জেএসসি) সপ্তম বৈঠকে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া বা জামালপুরসহ তিনটি রুট ব্যবহার করে ভারতের আসাম থেকে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ প্রেরণ করতে পারে।

বাংলাদেশ সরকার–সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে ভারতীয় ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে সঞ্চালিত মোট বিদ্যুতের ২০-২৫ শতাংশ কেনার পাশাপাশি হুইলিং চার্জ থেকে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ভারতকে স্থল ও নৌ ট্রানজিট, চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যবহার এবং ট্রান্সশিপমেন্টসহ বহুমুখী করিডর ও সংযোগসুবিধা দিয়েছে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, প্রাক্কলিত অনুপাতে প্রত্যাশিত ট্রানজিট ফি বাংলাদেশ পায়নি।

ভারত বাংলাদেশকে টনপ্রতি ট্রানজিট ফি দিতে অস্বীকার করে জাহাজ কিংবা ট্রাকপ্রতি নামমাত্র ফি দিতে চায়, এতে নৌরুটের ড্রেজিং, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা পণ্য নিরাপত্তার কোনো খরচই উঠে আসবে না। অর্থাৎ বিপুল আলোচিত ট্রানজিট বাংলাদেশের পক্ষে প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক উপযোগ কতটা তৈরি করতে পারবে, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।

বাংলাদেশের নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ২২ হাজার মেগাওয়াটের বিপরীতে সর্বোচ্চ উৎপাদন সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। তথাপি বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর থেকে ভেড়ামারা হয়ে প্রায় ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট এবং উত্তর-পূর্ব ত্রিপুরা রাজ্য থেকে আখাউড়া হয়ে ১৪০ মেগাওয়াট ক্রসবর্ডার বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ।

image_pdfimage_print