আজ (২৩ এপ্রিল) সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পারকুমিরা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিনে তালা উপজেলার পারকুমিরা নামক স্থানে ৭৯ জন গ্রামবাসীকে পাকসেনারা ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। এরমধ্যে ৪৯ জনের লাশ পারকুমিরার বধ্যভূমিতে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়। বাকি কয়েকজন শহীদদের লাশ পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়। এদিন কাশিপুর গ্রামের শেখ হায়দার আলীকে পাকসেনারা গায়ে পাট জড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে।
শহীদ পরিবারের সন্তান তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নূরুল ইসলাম সেদিনের সেই বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের লোমহর্ষক কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, সেদিন ছিল শুক্রবার। মসজিদে জুম্মার আযান হচ্ছিল। এ সময় পাটকেলঘাটা থেকে পাকিস্তানী হায়নারা পারকুমিরায় গিয়ে নিরীহ গ্রামবাসীকে আলোচনার কথা বলে একত্রিত করে। এ সময় সহজ সরল গ্রামবাসীর উপর ব্রাশফায়ার করলে ঘটনাস্থলেই ৭৯ জন নিহত হয়। এদের মধ্যে যশোর নওয়াপাড়া, খুলনার ফুলতলা, চুকনগর, ডুমুরিয়া, পাইকগাছাসহ বিভিন্ন এলাকার আশ্রয় সন্ধানে আশা শরণার্থীদের উপর নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সেদিন যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের কয়েকজনের পরিচয় তাৎক্ষনিক পাওয়া যায়। তাদের কয়েকজন হলেন- তালা উপজেলার পুটিয়াখালী গ্রামের শেখ আব্দুর রহমান, শেখ আলাউদ্দীন, শেখ সামছুর রহমান, শেখ বদরুদ্দীন, মো. সালমত আলী, শেখ ফয়জুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, শেখ বিলায়েত আলী, সাজ্জাত আলী প্রমুখ। শহীদদের অনেককেই পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়। বাকী যাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি ঐ সময় তাদেরকে পারকুমিরার ঐ বধ্যভূমিতে গণকবর দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মতিলাল কুণ্ড, ননীলাল কুণ্ডু, দীলিপ কুণ্ড, ডা. মণিন্দ্রনাথ সরকার, মুরারীমোহন কুণ্ডু, গোষ্ঠ কুণ্ডু,গোপাল কুণ্ডু, শচীন দে, মোহনলাল কুণ্ডু, রণজিৎ কুণ্ডু, খোকন কুণ্ড, জীবন কুণ্ডু, বিমল কুণ্ড, মনোরঞ্জন কুণ্ডু, খগেন কুণ্ডু, ফ্যাকা কুণ্ডু, ননী কুণ্ডু, দীলিপ কুণ্ডু, গোবিন্দ কুণ্ডু, কানাইলাল কুণ্ড, প্রতিমা কুণ্ডু, মনোঞ্জন কুণ্ড, হারাধন কুণ্ডু, শৈলেন কুণ্ডু, কৃষ্ণভূষণ কুণ্ডু, গোষ্ঠ বিহারী কুণ্ডু, পাগল কুণ্ড, নিমাই সাধু, হায়দার আলী, আবদুর রউফ বিশ্বাস, দীনবন্ধু সরদার, অনীল দাস, ষষ্টিপদ কুণ্ডু, সাজ্জাদ আলী শেখ, হরিবিলাস দত্ত, হাজু ঋষি, মহেন্দ্রনাথ সরকার, পরিমল মণ্ডলসহ অনেকেরই পরিচয় পাওয়া যায়।