Prophets and Messengers are the main teachers of human civilization.

প্রথম নবী আদম (আ.)-এর মাধ্যমে মানবসভ্যতার যাত্রা শুরু হয়। সন্তানদের মধ্যে নবী-রাসুলরাই ছিলেন মানবসভ্যতার ধারক ও মানবজাতির অভিভাবক। যারা একই সঙ্গে মানবজাতিকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন এবং তাদের মাধ্যমে সভ্যতার নতুন ধারা বিকশিত হয়েছে। যেমন আরব সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল ইবরাহিম (আ.)-এর সন্তান ইসমাইল (আ.)-এর মাধ্যমে। এই সভ্যতার গোড়াপত্তনের সময় তিনি দোয়া করেন, ‘হে আমার প্রতিপালক, আমি আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করালাম অনুর্বর উপত্যকায় তোমার পবিত্র ঘরের কাছে; হে আমাদের প্রতিপালক! এ জন্য যে তারা যেন নামাজ কায়েম করে। অতএব তুমি কিছু লোকের অন্তর তাদের প্রতি অনুরাগী করে দাও এবং ফল-ফলাদি দ্বারা তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করো, যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩৭)

সভ্যতার নিয়ন্ত্রণ আল্লাহর হাতে : পৃথিবীতে মানুষের জীবন ও জীবিকা এবং তাদের জীবনধারার নিয়ন্ত্রণ মহান আল্লাহর হাতে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা কি তোমার প্রতিপালকের করুণা বণ্টন করে? আমিই তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বণ্টন করি, পার্থিব জীবনে এবং একজনকে অপরের ওপর মর্যাদায় উন্নত করি, যাতে একে অপরের দ্বারা কাজ করিয়ে নিতে পারে।’ (সুরা জুখরুফ, আয়াত : ৩২)

মানুষের আধিপত্যে সভ্যতার বিপর্যয় : কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি মানুষের জীবন-জীবিকা তথা মানুষের জীবনধারার নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তবে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। আল্লাহ বলেন, ‘ফিরাউন দেশে পরাক্রমশালী হয়েছিল এবং সেখানের অধিবাসীদের বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করে তাদের একটি সে হীনবল করেছিল; তাদের পুত্রদের সে হত্যা করত এবং কন্যাদের জীবিত থাকতে দিত। সে তো ছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারী।’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ৪)

 

সভ্যতার ক্রমবিকাশ রক্ষায় হয় বিবর্তন : আল্লাহ মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশ নিশ্চিত করতে পৃথিবীতে নানা ধরনের বিবর্তন ঘটান। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা পেছনে রেখে গেছে কত উদ্যান ও প্রস্রবণ; কত শস্যক্ষেত ও সুরম্য প্রাসাদ, কত বিলাস-উপকরণ, তাতে তারা আনন্দ পেত। এরূপ ঘটেছিল এবং আমি এই সমুদয়ের উত্তরাধিকারী করেছিলাম ভিন্ন সম্প্রদায়কে। আকাশ ও পৃথিবী কেউ তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হয়নি।’ (সুরা দুখান, আয়াত : ২৫-২৯)

সভ্যতার শত্রুরা আল্লাহর শত্রু : যারা সমাজ ও সভ্যতা, মানুষ ও মানবতার বিরুদ্ধে কাজ করে তারা আল্লাহর শত্রু। কোরআনে তাদের কর্মকাণ্ডকে আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায় এটা তাদের শাস্তি যে তাদের হত্যা করা হবে অথবা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে বা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে অথবা তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। পৃথিবীতে এটাই তাদের লাঞ্ছনা ও পরকালে তাদের জন্য মহাশাস্তি আছে।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৩৩)

image_pdfimage_print