পুরান ঢাকার ধূপখোলা বাজারে রফিকুল ইসলাম, আনন্দ বাবু ও সুব্রত কুমার আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রধান সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে গল্প করার সময় কারও মুখে ছিল না মাস্ক। একটু পর পাশের চায়ের দোকানেও আড্ডা দিয়ে চলে যান তাঁরা।
সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যে বাইরে আড্ডা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, রমজান মাস থেকেই তো লকডাউন চলছে। কখনো কঠোর আর কখনো সীমিত তা তো আর বোঝা যায় না। বৃষ্টি ও লোক কম থাকায় বাইরে কি অবস্থা দেখতে বেরিয়েছিলাম।
কি অবস্থা দেখলেন এমন প্রশ্নে তিন বন্ধু বলেন, সব জায়গায় স্বাভাবিক। শুধু প্রধান সড়কগুলোতে কোথাও কোথাও পুলিশ বাঁশ লাগিয়ে চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। কিন্তু মানুষ বাঁশের মধ্যে দিয়েই চলাচল করছেন। আর অলিগলিতে সকাল থেকেই দোকানপাট খোলা রেখে স্বাভাবিক বেচা বিক্রি ও মানুষ আড্ডা দিচ্ছেন।
এই তিন দিন বন্ধুর কথা সত্যতা পাওয়া গেছে পুরান ঢাকার বিভিন্ন বাজার ও অলিগলি গলি ঘুরে।
বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার নারিন্দা বাজার, লক্ষীবাজার, ধূপখোলা বাজার, গেন্ডারিয়া বাজার, বংশাল ও ওয়ারী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রধান সড়কের পাশের বড় বড় দোকানগুলো বন্ধ থাকলেও ছোট ছোট দোকানগুলো ছিল খোলা। খাবারের দোকানগুলোয় নির্দেশনা অমান্যে করে বসেই খাচ্ছেন, আড্ডা দিচ্ছেন অনেকে। এমনকি সারা দিনের বৃষ্টি উপেক্ষা করে কঠোর লকডাউন দেখতে বেড়িয়েছিলেন অনেকে। জরুরি কাজ ছাড়া বেরুনো এসব মানুষের অনেকেই মানছিলেন না সরকারি স্বাস্থ্যবিধি।
ধূপখোলা বাজার এলাকার ডিস্ট্রিলারী রোডে দুপুরে চুলকাটাতে এসেছিলেন রতন সরকার। একটি সেলুনে শাটার বন্ধ করে ভেতর চুল কাটা হচ্ছিল। দোকানের নামানো শাটার টোকা দিতে রতনকে ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়ে আবার শাটার নামিয়ে নেওয়া হয়।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে ধূপখোলা বাজারের ফুটপাতের দোকানগুলোকে পাশের সিটি করপোরেশনে মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচা বাজারের এসব দোকানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে চলছিল বেচাকেনা। তবে দোকানদারদের অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করতে দেখা যায়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী সাকিব হাসান স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসেছিলেন কাচাবাজারে। সাকিব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, লকডাউন আগের মতোই। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ও লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।