যোগ্য নেতৃত্ব ও কর্মতৎপরতার মাধ্যমে উন্নত দেশ গঠন এবং দেশের উন্নতি-অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম। এটা সর্বজন বিধিত যে, কেবল তরুণরাই পারবে সুন্দর, সুখী ও সমৃদ্ধশালী আদর্শ সমাজ বিনির্মাণ করতে। তারুণ্য মানবজীবনের অমূল্য এক সম্পদ। এটা জীবন মহীরুহের বিকশিত চারাগাছ। তারুণ্য কাঁচা বয়সের একটি উদ্দীপনার নাম।
তারুণ্য অর্থ হচ্ছে বাঁধা না মানা। তীব্র স্রোতে উজান সাঁতারে পাড়ি দেয়াই তারুণ্যের ধর্ম। চেতানাদৃপ্ত তরুণরা যখন জেগে ওঠে তখন সকল প্রতিবন্ধকতার সকল চড়াই-উৎরাই মাড়িয়ে তারা বিজয় ছিনিয়ে আনে৷ বিজয়ের পুষ্পমালা তাদের পদচুম্বন করে। ইতিবাচক অর্জনসহ সর্বক্ষেত্রেই রয়েছে তাদের অবদান। তারুণ্য তথা যৌবনকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে ইহকালে কল্যাণ ও পরকালীন জীবনে মুক্তির বিশাল বাগিচায় উপনীত হওয়া যাবে।
বর্তমান সমাজকে অপরাধমুক্ত করতে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি বিকল্প উপায় দেখতে হবে৷ শুধু শাস্তি দিয়ে অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব নয়। অপরাধ বন্ধ করতে শাস্তির পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
বর্তমান পৃথিবীতে বিত্ত-বৈভবের পেছনে ছুটতে গিয়ে আমাদের সামাজিক বন্ধন দুর্বল বা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরিবার ও সমাজ থেকে শিক্ষা নেওয়া- যেটা আগে অনেক ছিল তা এখন কমে গেছে। তাই আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করতে হবে।
অপরাধ দমনে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে৷ বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে অপরাধের ধরণ ও অপরাধ সংঘটনের কৌশল বদলে যাচ্ছে। সামাজিক অপরাধ দমনে সমাজ, সম্প্রদায় ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
যেখানে অপরাধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা, সেখানে তাদের কাছে নতজানু হয়ে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার পরিবেশে বাস করছি আমরা।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, সমাজে চিহ্নিত অপরাধীদের সামাজিক বর্জন করার সময় এসেছে৷ এখন শুধু তা কার্যকর করতে হবে৷ তা কেবল তরুণরাই করতে পারে, রুখে দাঁড়ানোর মাধ্যমে৷ যেমন করে আমার মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলসামসদের সামাজিক ভাবে বর্জন করেছি৷ ঠিক তেমন করে বর্তমান সময়ের দেশদ্রোহী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস, ধর্ষকসহ দেশীয় আইন ও সংবিধান-বিরোধীদের রুখে দিতে পারি৷
এক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকা তরুণরাই দেখাতে হবে৷ এখন থেকে তরুণদের শপথ করতে হবে, দেশদ্রোহী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস, ধর্ষকসহ দেশীয় আইন ও সংবিধান-বিরোধীদের সাথে কোন সম্পর্ক করবো না৷ ছেলে হলে এদের মেয়ে এবং মেয়ে হলে এদের ছেলে সন্তানদের বিয়ে বা বন্ধু করবো না৷ তাতে করে অভিভাবক অপকর্ম থেকে বের হয়ে আসবে একই সাথে আগামী প্রজন্ম শুদ্ধ হয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি৷