‘সব ব্যবসায়ীরাই আমে বিষ দেয় তাই আমিও দেই। এই ওষুধ দিলেই দ্রুত আম পেকে যায় ও রং ভালো হয়। এটা অপরাধ আমি জানি, তাও দিচ্ছি সবাই দেয় সে কারণে। এভাবেই নিজের সরল স্বীকারোক্তি দিলেন আম ব্যবসায়ী শওকত আলী।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শাহপুর গ্রামের আকছেদ মোড়লের ছেলে শওকত আলী আরও বলেন, এই আম তালা বাজার, খুলনাসহ বিভিন্নস্থানে নিয়ে বিক্রি করি। প্রশাসনের কেউ বাঁধা দেয়নি।
মঙ্গলবার (১১ মে) তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শুকদেবপুর গ্রামের মনিরুদ্দীন বিশ্বাসের আমবাগানের গাছ থেকে আম ভাঙছেন শ্রমিকরা। গাছ থেকে পেড়ে আমগুলো নিচে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানেই ‘ব্রাইট-১৫’ নামের বিষ পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করছেন আম ব্যবসায়ী শওকত আলী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সব আম ব্যবসায়ীরা এখন গাছ থেকে আম ভাঙছেন। গাছতলায় আমে বিষ স্প্রে করে বাজারজাত করা হচ্ছে। বিষ স্প্রে করলেই পরদিন পেকে যায় আম। আমে বিষ দিয়ে পাকালে সেটি ক্ষতিকর সবাই জানে তবে একাজে কেউ বাঁধা দেয় না। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদেরও কোন পদক্ষেপ নিতে দেখি না।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: নুরুল ইসলাম জানান, কোনভাবেই আমে রাসায়নিক দ্রব্য কেমিক্যাল বা বিষ প্রয়োগ করা যাবে না। জেলার সকল আম ব্যবসায়ীদের এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল জেলা নিরাপদ আম বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং করা হয়েছে। সেখানে দিনক্ষণ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কোন আম কোন তারিখ থেকে ব্যবসায়ীরা ভাঙতে পারবেন। কেউ আমে ক্যামিকেল বা রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগের খবর পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালা উপজেলা কৃষি অফিসার হাজিরা খাতুন বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। তবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়টি জরুরিভাবে দেখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।