সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি) বন্ধ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মাঝে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। বড় বড় ব্যাংকগুলো বন্ডে যা দেখাচ্ছে তার সঙ্গে তাদের শেয়ারবাজারে তাদের ভ্যালুর মধ্যকার পার্থক্য বাড়ছে। খবর: সিএনএন’র।
এককভাবে এসভিবির ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটেছিল। প্রচুর গ্রাহক অর্থ জমা দিতে এসেছিলেন এবং সেসব অর্থ কোথাও না কোথাও রাখার দরকার ছিল। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকটির বন্ডের মূল্য কমে যাচ্ছিল।
ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি) বলেছে, ‘সংকট শুধু এসভিবি একা মোকাবিলা করছে না, যুক্তরাষ্ট্রের ২০২২ সালের শেষে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলো ৬২০ বিলিয়ন ডলার অপ্রদর্শিত লোকসানের ওপর বসে ছিল। অর্থাৎ সম্পদের দাম কমে গেছে কিন্তু বিক্রি হয়নি, এমন কারণে।’
এর আগে যখন সুদের হার প্রায় শূন্যের কোটায় চলে গিয়েছিল, মার্কিন ব্যাংকগুলো তড়িঘড়ি করে প্রচুর বন্ড কিনেছিল। এবার ফেডারেল রিজার্ভস যখন মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে সুদহার বাড়িয়ে দিল, ওইসব বন্ডের মূল্য স্বভাবতই কমে গেল।
সুদহার যেই বাড়ল, নতুন করে ছাড়া বন্ডগুলো বিনিয়োগকারীদের বেশি করে মুনাফা দিতে শুরু করল। ফলে পুরনো বন্ডগুলো কম মূল্যের কারণে আকর্ষণ হারাল এবং তাদের দামও কমতে থাকল। এর কারণে শেষমেষ দেখা গেল, ব্যাংকগুলোর নথিতে অপ্রদর্শিত কিছু লোকসান রয়ে গেল।
এফডিআইসির চেয়ারম্যান মার্টিন গ্রেনবার্গ গত সপ্তাহে ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকারসের অনুষ্ঠানে বলেন, ‘অর্থায়ন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর মুনাফার হার ও ঝুঁকির মাত্রায় নাটকীয় প্রভাব ফেলেছে এই বর্তমান সুদের হার। হঠাৎ করে বেশি পরিমাণে মুদ্রার প্রয়োজন পড়লে অপ্রদর্শিত লোকসানের কারণে ব্যাংকগুলো সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুর্বল হয়ে পড়ে।’
তবে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয় বলেই মত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সিএনএনকে এমনটিই বলেছেন কিংস কলেজ লন্ডনের ফাইন্যান্সের অধ্যাপক জেন্স হেজেনডর্ফ।
বেশিরভাগ মার্কিন ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল পরিস্থিতি ভাল। শেয়ারবাজারে বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক পর্যায়ে চলে গেলেও শুক্রবার তা ঠিক হয়ে গেছে।
প্রথমে শুক্রবার সকালে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধের পাশাপাশি ‘ফার্স্ট রিপাবলিক’, ‘প্যাকওয়েস্ট ব্যানকর্প’ ও ‘সিগনেচার ব্যাংক’র শেয়ার বেচাকেনা সাময়িক স্থগিত করা হয়। পরে আজ সোমবার এসে সিগনেচার ব্যাংকও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।