স্লোগান রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার সঙ্গে, নানামাত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে। স্লোগান কখনো উদ্ভূত হয় তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে—কখনো বা সুচিন্তিত উপায়ে। জনতার মিছিল থেকে উচ্চারিত হয় স্লোগান—তার কোনোটি লাভ করে জনপ্রিয়তা, আবার কোনোটি বা হারিয়ে যায় কালের গর্ভে। জনপ্রিয় স্লোগানটি প্রবহমান থাকে যুগের পর যুগ জনমানুষের কণ্ঠে—ক্রমে তা হয়ে ওঠে ইতিহাসের অংশ।
স্লোগানের বিষয় ও ভাষা বিশ্লেষণ করলে বিশেষ সময়ের সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সম্যক অবহিত হওয়া যায়। বস্তুত স্লোগানের ভাষার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারা।
গণমানুষের ন্যায়সংগত দাবি আদায়ের অন্যতম উপায় স্লোগান। সে সূত্রে আন্দোলন ও স্লোগান শব্দদ্বয় অঙ্গাঙ্গিভাবে একাত্ম। জনতার আন্দোলনে স্লোগান উচ্চারিত হবে না—এ কথা কল্পনাই করা যায় না। বস্তুত স্লোগান ছাড়া কোনো আন্দোলন যেন পূর্ণতা পায় না। স্লোগান মিছিলে অংশগ্রহণকারী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করে, তাদের করে তোলে চাঙ্গা। স্লোগানে উচ্চারিত দাবি ক্রমে বিশেষ একটি জনগোষ্ঠীর সামষ্টিক দাবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। স্লোগানে উচ্চারিত দাবিসমূহের থাকে দুটি অংশ—প্রথম অংশ উচ্চারিত হয় মিছিলে নেতৃত্বদানকারী কোনো ব্যক্তির কণ্ঠে, আর দ্বিতীয় অংশ উচ্চারিত মিছিলকারী মানুষের সমবেত কণ্ঠে। স্লোগানের এই দ্বিবিধ অংশ মিছিলের শৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং দাবি উত্থাপনে পালন করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। স্লোগান মিছিলে অংশগ্রহণকারী মানুষের চেতনায় সৃষ্টি করে সুরের মূর্ছনা, তাকে করে তোলে আবেগায়িত—ফলে মিছিলের সঙ্গে সৃষ্টি হয় তার গভীর সংযোগ। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের চেতনায় আবেগ আর সংযোগ সৃষ্টির কাজটি করে থাকে স্লোগানের ভাষা। এ সূত্রেই বিবেচ্য স্লোগানের ভাষার চারিত্র্য ও তাৎপর্য।
মুখনিঃসৃত শব্দের মাধ্যমে উচ্চারিত সমবেত দাবিই পরিণত হয় স্লোগানে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কোনো সমাবেশ মিছিল ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। মিছিলে উচ্চারিত স্লোগান সভা-সমাবেশের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মাঝে সঞ্চারিত হয়ে যায়। তাই স্লোগানের রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব। ব্যক্ত হয়েছে যে স্লোগানের ভেতর দিয়েই একটি জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায়। এ কথা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আরো বিশেষভাবে সত্য। বাংলাদেশের গণ-আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্লোগানসমূহ বিশ্লেষণ করলেই এ কথার যাথার্থ্য উপলব্ধি করা সম্ভব।
গণ-আন্দোলন সূত্রেই সৃষ্টি হয় স্লোগান। তাই যেকোনো স্লোগানেরই থাকে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। ব্রিটিশ আমলে নানামাত্রিক আন্দোলন হয়েছে, হয়েছে অনেক কৃষক বিদ্রোহ। কিন্তু সেই সব আন্দোলন-বিদ্রোহের সময় কী ধরনের স্লোগান উচ্চারিত হতো, কিংবা আদৌ হতো কি না সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না। কৃষক বিদ্রোহের সূত্রে পাওয়া যায় বিখ্যাত স্লোগান ‘লাঙ্গল যার জমি তার’, ‘সবার জন্য ডাল ভাত, ‘শক্ত কর প্রজার হাত’, ‘বিনা খেসারতে জমিদারি প্রথা বিলোপ কর, বিলোপ কর’ ইত্যাদি। পাকিস্তান আন্দোলন ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সময় স্লোগানের ব্যাপকতা অনেক বৃদ্ধি পায়। পাকিস্তান আন্দোলনের সময় বিশ শতকের চল্লিশের দশকে কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় মুসলমান জনগোষ্ঠীর মুখে উচ্চারিত হতে থাকে এই সব স্লোগান : ‘লড়কে লেয়েঙ্গে পাকিস্তান, ছিনেক লেয়েঙ্গে পাকিস্তান’, ‘সিনেমে গুলি লেয়েঙ্গে, পাকিস্তান বানায়েঙ্গে’, ‘কানমে বিড়ি মুখে পান’, ‘লড়কে লেয়েঙ্গে পাকিস্তান’ ইত্যাদি। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর বাঙালিদের মোহমুক্তি ঘটে—তখন প্রগতিশীল বামপন্থীদের মুখে উচ্চারিত হয় ‘লাখো ইনসান ভুখা হ্যায়, ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়’, ‘সাদা হাতির কালো মাহুত, নতুন বোতলে পুরোনো মদ’ ইত্যাদি স্লোগান।
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে মিছিলে মিছিলে উচ্চারিত হতে থাকে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক সরকারের ভাষানীতির বিরুদ্ধে অনেক স্লোগান। এ সময়ের উচ্চারিত স্লোগানসমূহে বাঙালির গণতান্ত্রিক চেতনার যেমন প্রকাশ ঘটেছে, তেমনি প্রকাশ ঘটেছে বাংলা ভাষার জন্য বাঙালির গভীর ভালোবাসার কথা। এ সময়ের স্লোগানের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য : ‘কায়েদে আজম জিন্দাবাদ, পাকিস্তান জিন্দাবাদ’, ‘উর্দুর সঙ্গে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে হবে’ ইত্যাদি। আরবি হরফে বাংলা লেখার অপকৌশলের বিরুদ্ধে উচ্চারিত হয় ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, আরবি হরফ চাই না’। এ সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্লোগান ছিল ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘ফ্যাসিস্ট লীগ সরকার নিপাত যাক’, ‘নাজিমউদ্দীন মন্ত্রিসভা পদত্যাগ কর’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, নইলে গদি ছাড়তে হবে’ ইত্যাদি। ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে ঢাকার আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘১৪৪ ধারা মানি না, মানব না’, ‘চল চল, পরিষদ চল’ ইত্যাদি। মিছিলে গুলিবর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে ছাত্রসমাজ। এ সময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্লোগান ওঠে ‘কসাই মুসলিম লীগ সরকার, ধ্বংস হউক নিপাত যাক’, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, লীগ সরকার নিপাত যাক’ ইত্যাদি। এ সময়ের বহুল উচ্চারিত একটি স্লোগান ছিল ‘পুলিশের জুলুম বন্ধ কর, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা কর’। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের উত্তুঙ্গ মুহূর্তে উচ্চারিত স্লোগানের মধ্যে আরো আছে ‘নূরুল আমিন গদি ছাড়ো’, ‘রক্তের বদলে রক্ত চাই’, ‘উর্দু ভাষা বর্জন কর’, ‘গুলিবর্ষণের তদন্ত চাই’, ‘বাংলা ভাষার রাষ্ট্র চাই’—এসব ঐতিহাসিক স্লোগান।
১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে উন্মথিত বাঙালির মুখে মুখে উচ্চারিত হয়েছে অনেক কালজয়ী স্লোগান। ১৯৫৬ সালে নবাবপুর রোডে ভুখা মিছিল থেকে উচ্চারিত হয় ‘কেউ খাবে তো কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না’ স্লোগান। এ সময় আরমানিটোলা মাঠে আয়োজিত জনসভায় যোগদানরত মিছিল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠ থেকে উচ্চারিত হয় ‘খেতে দাও, নইলে গদি ছেড়ে দাও’ স্লোগান। ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনের মিছিল থেকে উচ্চারিত স্লোগানের মধ্যে আছে ‘শরীফ কমিশন রিপোর্ট বাতিল কর বাতিল কর’, ‘হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিল কর বাতিল কর’, ‘ছাত্র ঐক্য জিন্দাবাদ’, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য চলবে না চলবে না’, ‘সামরিক শাসন মানি না মানি না’ ইত্যাদি। এ সময়েরই একটি জনপ্রিয় স্লোগান ছিল ‘জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো’। উত্তরকালে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মিছিলকারীদের মুখে মুখে উচ্চারিত হতে থাকে এই স্লোগান, যার ধারা এখনো বহমান।
১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা এবং ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপটে মিছিলে মিছিলে উচ্চারিত হতে থাকে অনেক স্লোগান। এসব স্লোগানের মধ্যে আছে—‘বাঙালির দাবি ছয় দফা, বাঁচার দাবি ছয় দফা’, ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘ছয় দফা মানতে হবে, নইলে গদি ছাড়তে হবে’, ‘জেলের তালা ভাঙব, শেখ মুজিবকে আনব’, ‘শেখ মুজিবের মুক্তি চাই’, ‘মিথ্যা মামলা তুলে নাও’, ‘আইয়ুবশাহী ধ্বংস হউক নিপাত যাক’ ইত্যাদি। এ সময় গোপন কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে উচ্চারিত হতে থাকে কিছু স্লোগান। এর মধ্যে আছে ‘বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস’, ‘চীনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান’, ‘তোমার বাড়ি আমার বাড়ি, নকশালবাড়ি নকশালবাড়ি’ ইত্যাদি।
১৯৬৮-৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টিতে স্লোগানের রয়েছে ঐতিহাসিক ভূমিকা। গণ-অভ্যুত্থানের পটভূমিতে সৃষ্ট স্লোগানসমূহ ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র বাংলাদেশে—এবং এভাবে সৃষ্টি হয় অভূতপূর্ব জাগরণ। এ সময়ের কয়েকটি ঐতিহাসিক স্লোগান হচ্ছে—‘তোমার দফা আমার দফা, এগারো দফা এগারো দফা’, ‘এগারো দফার ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তোল’, ‘জেলের তালা ভাঙব, শেখ মুজিবকে আনব’, ‘জয় জয় হবে জয়, বাংলার হবে জয়’, ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’ ইত্যাদি। এ সময় ছাত্রদের মিছিলে মিছিলে উচ্চারিত জনপ্রিয় স্লোগান ছিল—‘আইয়ুব-মোনেম ভাই ভাই, এক দড়িতে ফাঁসি চাই’। এ সময় গোপন বামপন্থীদের মুখে উচ্চারিত হতো ‘মুক্তির একই পথ, সশস্ত্র বিপ্লব’, ‘কৃষক শ্রমিক অস্ত্র ধর, জনগণতন্ত্র কায়েম কর’ এসব স্লোগান। ১৯৬৯-এর সময় থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠ থেকে উচ্চারিত হতে থাকে বাঙালির ঐতিহাসিক স্লোগান ‘জয় বাংলা’।
গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিরোধীপক্ষরাও নিশ্চুপ ছিল না স্লোগান সৃষ্টির ভুবনে। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শক্তির সহযোগী কিছু গোষ্ঠীর মুখে এ সময় উচ্চারিত হয় বাংলাদেশের স্বাধিকারবিরোধী অনেক স্লোগান—যেগুলো ছিল কুরুচিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতিবর্জিত। এ রকম কয়েকটি স্লোগান নিচে দেওয়া হলো, যা থেকে ওই গোষ্ঠীর হীন মানসিকতাই ব্যক্ত হয়। এসব নেতিবাচক স্লোগানের মধ্যে আছে—‘পাকিস্তানের শত্রুরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘সর্দি কাশি হাঁপানি, মওলানা ভাসানী’, চিড়িয়াখানার আজব প্রাণী মওলানা ভাসানী’, ‘চিড়িয়াখানার আজব জীব, শেখ মুজিব শেখ মুজিব’ ইত্যাদি।
বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে ১৯৭০ সালের নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উচ্চারিত হতে থাকে অনেক স্লোগান। এসব স্লোগানে অঙ্কিত হয়ে আছে আমাদের মুক্তিসংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল অনেক অনুষঙ্গ। নির্বাচন উপলক্ষে সৃষ্ট এমন কিছু ঐতিহাসিক স্লোগান ছিল এ রকম : ‘নৌকা মার্কায় দিলে ভোট, শান্তি পাবে দেশের লোক’, ‘পদ্মা-মেঘনা-মধুমতী, নৌকা ছাড়া নাইকো গতি’, ‘নৌকার মাঝি মুজিব ভাই, সবার কাছে দোয়া চাই’, ‘আওয়ামী লীগে দিয়া ভোট, বীর বাঙালি বাঁধো জোট’, ‘ভোট দিলে পাল্লায়, দেশ যাবে গোল্লায়’, ‘গাছের আগায় পক্ষী, শেখ মুজিব লক্ষ্মী’, ‘স্বাধীনতার শপথ নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন’ ইত্যাদি। সত্তরের নির্বাচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’, বর্তমানে যা জাতীয় স্লোগানের মর্যাদায় অভিষিক্ত। এ সময়েই বাংলার আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে ‘ঢাকা না পিন্ডি, ঢাকা ঢাকা’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’ এই সব স্লোগান।
১৯৭১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময় বিখ্যাত স্লোগান ছিল ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’। এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে উপ্ত হয় বাংলাদেশ নামের জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির বীজ। এ সময়ের আর একটি স্লোগান ছিল—‘শেখ মুজিবের পথ ধর, বাংলাদেশ কায়েম কর’।
বাংলাদেশের গণ-আন্দোলনের স্লোগানের ভাষা কবিতাশ্রয়ী এবং সাংগীতিক। স্লোগানের সাংগীতিক ভাষা এবং সুরমূর্ছনা সমবেত মিছিলকারীদের ঐক্যবদ্ধ করতে পালন করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মিছিল থেকেই উচ্চারিত হয় এমন স্লোগান—‘লাঠি গুলি টিয়ারগ্যাস, জবাব দেবে বাংলাদেশ’, যা মুহূর্তেই অংশগ্রহণকারীদের করে তোলে চাঙ্গা। বাংলাভাষী অন্যান্য অঞ্চলের স্লোগানের ভাষায় বাংলাদেশের স্লোগানের ভাষার মতো সাংগীতিক সুরমূর্ছনা লক্ষ করা যায় না। আমাদের স্লোগান আমাদের জাতিসত্তার নানামাত্রিক আন্দোলনের ঐতিহাসিক সাক্ষী, আমাদের পরম সম্পদ, আমাদের অস্তিত্বের অমলিন অনুষঙ্গ।