সাধারণত একটি কুকুরের গড় আয়ু ১০-১৫ বছর। তবে কোনো কুকুর যদি টানা ৩০ বছর ধরে বেঁচে থাকে, তাতে অবাক হওয়ারই কথা। আর এ অসাধ্য সাধন করেছে ববি নামের পর্তুগালের একটি কুকুর। এরই মধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুকে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক কুকুরের তকমাও জিতে নিয়েছে ববি। কুকুরটির এত দীর্ঘায়ু দেখে একে ‘অলৌকিক’ আখ্যা দিয়েছে খোদ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুক কর্তৃপক্ষ। খবর এনপিআরের।
একটি সাধারণ কুকুরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ সময় ধরে বেঁচে আছে ববি। আর এরই মাধ্যমে প্রায় শতবর্ষ পুরোনো রেকর্ড ভেঙেছে কুকুরটি। এর আগে, ১৯১০ সালে জন্ম নেয়া অস্ট্রেলিয়ার একটি কুকুর বেঁচে ছিল ২৯ বছর পাঁচ মাস। সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে এই পর্তুগালের কুকুর।
পর্তুগালের প্রত্যন্ত গ্রামে ১৯৯২ সালের মে মাসে জন্ম হয় ববির। এখন সে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দিন ধরে বেঁচে থাকা কুকুর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। অথচ জন্মের পরই মৃত্যু হতে পারতো কুকুরটির। মূলত, মালিক লিওনেল কস্তার বয়স যখন আট তখন জন্ম হয় ববির। কস্তার দরিদ্র শিকারি বাবার কাছে আগে থেকেই অনেক প্রাণী ছিল। তাই নতুন জন্ম নেয়া কুকুরগুলোকে মাটিতে পুঁতে দিতেন তিনি। কিন্তু কোনোক্রমে কাঠের স্তুপে লুকিয়ে থাকায় বেঁচে যায় ববি। কয়েকদিন পর সেটি খুঁজে পায় কস্তা। এরপর থেকেই তিনি পরম মমতায় প্রাণীটিকে লালন পালন করছেন। আদরের কুকুরের নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুকে ওঠায় গর্বিত কস্তা।
কস্তা বলেন, এই অনুভূতি গর্বের, যা প্রকাশ করার ভাষা আমার জানা নেই। আশপাশের অনেক মানুষই বলেছিল এমনটা হবে না। তবে মা এবং আমি জানতাম এটি হবেই। কারণ, আমরা ববির আসল বয়স জানি। আমরা একরকম নিশ্চিত ছিলাম যে পরীক্ষায-নিরীক্ষায় ববির বয়স নিয়ে আমরা যেটা জানি সেটাই প্রমাণ হবে এবং হয়েছেও সেটা।
কুকুরটির এমন দীর্ঘায়ু নিয়ে কস্তা বলেন, গোটা জীবনে আমরা কখনই ববিকে খাঁচা কিংবা শেকলে বন্দি করিনি। স্বাধীনতার এ অনুভূতি তার দীর্ঘায়ুর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এছাড়া, অবশ্যই আমাদের স্নেহ-ভালোবাসা তাকে দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে। তবে তার এই দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার মূল কারণ অবশ্যই সে নিজে।
এখন অবশ্য ববির শরীরে বয়সের ছাপ স্পষ্ট। খসে পড়েছে শরীরের অধিকাংশ পশম, কমে গেছে দৃষ্টি শক্তি। কিছু দূর হাঁটলেই হাঁপিয়ে যাচ্ছে প্রাণীটি।