Leather is rotting and smelling due to labor shortage

করোনার সংক্রমণ রোধে শুক্রবার থেকে দেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করায় ট্যানারি শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা ছিল না সাভার চামড়াশিল্প নগরীতে। যাতায়াতের নিজস্ব কোনো ব্যবস্থা না থাকায় লকডাউনের কারণে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শ্রমিকরা সাভারের চামড়াশিল্প নগরীতে কাজে যোগ দিতে আসতে পারেননি। এ ছাড়া করোনা ও লকডাউনের কারণে অনেক শ্রমিক ঢাকা ছেড়ে চলে যাওয়ায় স্বল্প শ্রমিক দিয়ে গত দুই দিন কাজ করিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা।

লকডাউনের প্রভাবে ব্যস্ততা নেই সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে

সরেজমিনে সাভার চামড়া শিল্প নগরী ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি ট্যানারির মূল ফটক বন্ধ রয়েছে। হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি ট্যানারির মূল ফটক খোলা থাকলেও সেখানে গিয়ে লক্ষ্য করা যায়নি শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা। শ্রমিকসংকটের বিষয়ে ট্যানারি শ্রমিক মো. মফিজ বলেন, করোনা এবং লকডাউনের কারণে কারিগর পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকা থেকে কারিগর না আসায় অনেক চামড়ায় লবণ লাগানো সম্ভব হয়নি। তিনি আরো বলেন, তিনি হাজারীবাগ থেকে ৩০ টাকার ভাড়া ১৫০ টাকা দিয়ে সাভারে পৌঁছেছেন। এখানে যারা কাজ করে সবাই স্বল্প আয়ের লোক, অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অনেকে কাজে আসেনি। তাই লোকবলের অভাবে প্রায় প্রতিটি ট্যানারির বিপুলসংখ্যক চামড়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কোরবানি পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে

ট্যানারিটির কাঁচা চামড়ার দায়িত্বে থাকা কালাম মুন্সী গরমের সময়টা কোরবানির অনুকূলে নয় দাবি করে বলেন, শীতের সময় একটি চামড়া আট ঘণ্টার জায়গায় ১০-১২ ঘণ্টাও রাখা যায়। কিন্তু গরমে আট ঘণ্টা একটি চমড়া লবণ ছাড়া রাখা অসম্ভব। তিনি অভিযোগ করেন, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার এখনো পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় ইউরোপিয়ান বায়াররা তাদের কাছ থেকে চামড়া কিনছে না। মেসার্স গোল্ডেন লেদার ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যাবসায়িক অংশীদার জাফর চৌধুরী বলেন, গত দুই দিন ধরে বৃষ্টির কারণে অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির পানি চামড়ার জন্য ক্ষতিকর, এটা এসিডের মতো কাজ করে। তিনি আরো বলেন, ঈদের দিনের চামড়া লবণ না মাখিয়ে পরের দিন সকালে ট্যানারিতে বিক্রি করতে নিয়ে আসে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। সেই চামড়া নামাতে নামাতে বিকালে দেখা যায় সবগুলোই নষ্ট হয়ে গেছে।

অন্যদিকে হঠাত্ করেই বৃহস্পতিবার সাভারের বিসিক চামড়াশিল্প নগরী পরিদর্শন করেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা। এ সময় তিনি বিসিক চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) পরিদর্শন করেন। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হঠাত্ চামড়াশিল্প নগরী পরিদর্শনের উদ্দেশ্য হলো মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সঠিক মূল্য পাচ্ছে কি না, চামড়ায় সঠিকভাবে লবণ যুক্ত করা হচ্ছে কি না এবং লবণের কোনো সিন্ডিকেট তৈরি হচ্ছে কি না—এই বিষয়গুলো তদারকি করা।
শিল্পসচিব বলেন, চামড়া একটি পচনশীল পণ্য, এটাকে সময় মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণ যুক্ত করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করতে হবে। সরকারের লক্ষ্য পরিবেশসম্মত চামড়া সংরক্ষণ করা। তাই জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনের সহায়তায় অস্থায়ীভাবে কোরবানির চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
image_pdfimage_print