গল্প ও চরিত্রকে প্রাধান্য দিয়ে নিয়মিত চলচ্চিত্রে কাজ করছেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। বর্তমানে হাতে রয়েছে একাধিক ছবির কাজ। নিজের নতুন ছবি, অভিনয় ভাবনাসহ ইন্ডাস্ট্রির সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বললেন ইত্তেফাকের সঙ্গে।
বর্তমান কাজের ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাই—
‘নরসুন্দর’ ছবিটির শুটিং শুরু করেছি। পাশাপাশি ‘গ্যাংস্টার’-এর বাকি অংশের শুটিং শিগগিরই শুরু করব। প্রস্তুতি চলছে ‘আর্তনাদ’ ছবিটির শুটিং নিয়েও। এছাড়া‘লাইভ’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বাহাদুরি’, নদীর বুকে চাঁদ’সহ বেশ কয়েকটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
আপনারা অ্যাকশন ঘরানার বাইরে গিয়ে গল্প নির্ভর কাজে বেশি মনোযোগী হচ্ছেন। এর কারণ কী?
সিনেমার আগের প্রেক্ষাপট কিন্তু এখন নেই। মানুষ এখন বাস্তব গল্প দেখতে চায়। যে গল্প সমসাময়িক অবস্থা তুলে ধরবে, চরিত্রগুলো ন্যাচারাল ইমেজ বহন করবে। এ কারণেই হয়তো সবাই একটু গল্প নির্ভর বা বাস্তবধর্মী কাজ বেশি করছেন।
আপনার সমসাময়িক অনেকেই নিয়মিত অভিনয় করছেন। তারপরও একাধিক স্টার তৈরি হচ্ছে না। এ জন্য কাকে দায়ী করবেন?
আগে বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যমই ছিল সিনেমা। কিন্তু এখন সেই ধারার বাইরে একাধিক মাধ্যম চলে এসেছে। তাছাড়া বিভিন্ন কারণে মানুষ আগের মতো আর হলমুখী হচ্ছে না। সিনেমার মার্কেট ছোট হয়ে যাচ্ছে। ফলে মেধাবী শিল্পীরা আসার পরও প্রেক্ষাপট বদলের কারণে প্রডাকশন হাউজগুলো নতুনদের প্রমোট করছেন না।
ওটিটি নিয়ে সাইমনের পরিকল্পনা ও প্রত্যাশা কী?
দেখুন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়েই সবাইকে কাজ করতে হবে। আমিও ওটিটিতে কাজ করতে আগ্রহী। ভালো পরিচালক, গল্প, চরিত্র দিয়ে ওটিটি যাত্রা শুরু করতে চাই।
ওটিটিতে ছবি মুক্তির চর্চা চলচ্চিত্র সংকট কতটা দূর করতে পারবে?
হলে সবাইকে নিয়ে দীর্ঘ সময় বসে ছবি দেখার যে অনুভূতি সেটা কিন্তু ছোট একটা ডিভাইসে পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু তারপরও যেহেতু এখন ওটিটির বেশ চাহিদা রয়েছে, মানুষ এখানে ছবি দেখছে সেহেতু এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য ভালো খবর। হলের পাশাপাশি ওটিটিতে ছবি মুক্তি দিলে ইন্ডাস্ট্রির জন্য ইতিবাচক হবে।
চলচ্চিত্র সংকটের জন্য কাকে দায়ী করবেন?
প্রথমত, চলচ্চিত্র সংকটের জন্য অবশ্যই গল্প, বাজেট দায়ী। এছাড়া নির্মাণ কৌশলের পরিবর্তন সবাই দেখতে চায়, সেখানেও আমরা পিছিয়ে আছি। তবে অনেক ভালো নির্মাতা এখন কাজ করছেন। আশা করছি শিগগিরই ভালো ভালো কাজ আমরা দেখতে পাবো।
এখন টিকটক-লাইকির ভিউ গুণে চলচ্চিত্রে কাস্ট হচ্ছেন। এটা চলচ্চিত্রের জন্য কতটা ইতিবাচক?
দেখুন, গল্পের প্রয়োজনে নির্মাতা যে কাউকে কাস্ট করতে পারেন। তাছাড়া যোগ্যতা থাকলে কোন মাধ্যম থেকে আসছে সেটা ব্যাপার না। তাদের ছোট করে দেখার কিছু নেই।
অনেকদিন পর নতুন ছবি মুক্তি দর্শকদের হলমুখী করতে পারবে কী?যদি দর্শকদের ভালো লাগার মতো সিনেমা নির্মাতারা তৈরি করে থাকেন তবে অবশ্যই তারা হলমুখী হবেন। এক্ষেত্রে প্রচারণাও খুব জরুরি। কারণ সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে, অথচ দর্শকরা জানলো না, তাহলে তো হবে না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারো দর্শক হলমুখী হবে।আমাদের দেশে ছবির প্রচারণা কম হওয়ার কারণ কী বলে মনে করেন?
এখানে প্রফেশনাল প্রযোজকের সংখ্যা খুবই কম রয়েছে। যে সকল প্রযোজক ছবি নির্মাণ করান, তারা হয়তো ‘প্রচারণায় যে প্রসার’ এই বিষয়টি তেমন বুঝতে পারেন না।