আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কয়েকটি সমাবেশ করেই সরকার পড়ে যাবে- এমনটি যারা ভাবেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ জলের স্রোতে ভেসে আসা কোন রাজনৈতিক দল নয় উল্লেখ করে, এদেশের মাটি ও মানুষের অনেক গভীরে প্রথিত আওয়ামী লীগের শেকড়। কয়েকটি সমাবেশ করে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) তার বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি একথা বলেন।
বিএনপি আরেকটি ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টির দুঃস্বপ্ন দেখছে- উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আরেকটি ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টির দুঃস্বপ্ন দেখে লাভ নেই। বাংলাদেশে ওয়ান ইলেভেনের পুনরাবৃত্তি আর কখনো হবে না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে উচ্চ আদালত, এটি আওয়ামী লীগ সরকারের কোন সিদ্ধান্ত নয়। ২০৪১ সাল পর্যন্ত কে ক্ষমতায় থাকবে, কে থাকবে না- তা একমাত্র আল্লাহ এবং দেশের জনগণ জানেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী, জনগণের আস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশের মানুষ চাইলে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে, না চাইলে করবে না। এ সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী কোন বিষয় নয়, জনগণের কল্যাণে কাজ করলে জনগণ কখনো কাউকে বিমুখ করে না। আর সেজন্য আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে জনমানুষের রাজনীতি করে আসছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। ষড়যন্ত্র, হত্যা ও আগুন সন্ত্রাসের রাজনীতি করে বিএনপি।
বিএনপিকে একটি অকৃতজ্ঞ দল হিসেবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের নেত্রীকে নির্বাহী আদেশে মুক্ত করে বাসায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সেই মানবিকতা ও কৃতজ্ঞতাবোধও তাদের নেই।
বিএনপি বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করে- এমন দাবি করে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, সরকার যে কাজই করুক বিচার-বিবেচনা না করে বিএনপি অন্ধ সমালোচনা শুরু করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুনিয়ার কোথাও যা নেই, তা নিয়ে কেন বিএনপি অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি করে? সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হবে পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মত, জনগণের জন্য রাজনীতি করলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে।
বিএনপি নেতাদের কথায় কথায় সবার পদত্যাগ ও মুখে গণতন্ত্রের কথা বলা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে বলেন, যাদের দলের অভ্যন্তরেই গণতন্ত্র নেই তারা দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে কিভাবে? যদি পদত্যাগ করতেই হয় তাহলে আন্দোলন ও নির্বাচনে টানা ব্যর্থতার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলামেরই সবার আগে পদত্যাগ করা উচিত।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব বিনা সম্মেলনে কয় বছর ধরে দলের মহাসচিব পদে জেঁকে বসে আছেন। বিএনপির সম্মেলন কবে হয়েছে, ফখরুল সাহেবের হয়তো তাও জানা নেই।
‘সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত’- বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগে বাস্তবতা অনুধাবন করতে শিখুন। দেশে আমার মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কত মেগা প্রকল্প হয়েছে এবং এদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। একথা দেশের মানুষ ভালো করেই জানে- কিন্তু বিএনপি জেনেও না জানার ভান করছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি বিআরটি প্রকল্পের বাস্তবতা তুলে ধরেছি, সত্যকে স্বীকার করার সৎ সাহস আমাদের আছে। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আমি বা আমরা বসে নেই। দ্রুত কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে।