বিএনপির লোকজন লাঞ্ছিত করলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল

বরিশালের বাবুগঞ্জে মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ তোলায় কিছু লোক এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদকে লাঞ্ছিত করে। গতকাল সোমবার তিনি সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে কথা বলেন। তবে কারা চাঁদা দাবি করেছে তা তিনি স্পষ্ট করেননি। তাছাড়া আমন্ত্রিত না হয়েও তিনি কেন ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ প্রসঙ্গে ফুয়াদ বলেন, চীনা কোম্পানির সঙ্গে কেউ কেউ যোগাযোগ করেছে। যোগাযোগের যে ভাষা ছিল তাতে চীনা কোম্পানি সন্তুষ্ট হয়নি। কারা যোগাযোগ করেছে সাংবাদিকরা বারবার জানতে চাইলেও তিনি তা স্পষ্ট না করে বলেন, আপনারা বুঝে নেন কারা করতে পারে। রোববারের লাঞ্ছনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির কিছু লোক আমাকেসহ এবি পার্টির নেতাকর্মীদের লাঞ্ছিত করেছে। কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। শুধু দুই থেকে তিনবার বাঁশি বাজিয়েছে।
ওই দিন ফুয়াদ অভিযোগ করেন, ‘রাজনৈতিক ছদ্মবরণে সেতু নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না ব্রিজ কনস্ট্রাকশন কোম্পানির কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে।’ এরপর স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা তাঁর ওপর চড়াও হয়। নিজ দলের কর্মীদের নিরাপত্তায় তাঁকে দ্রুত ওই এলাকা ছাড়তে হয়। ঘটনাটি রোববার ঘটেছিল।
জানা গেছে, ওই অনুষ্ঠানে ফুয়াদ আমন্ত্রিত ছিলেন না। শোডাউন করে তাঁর সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনে তিনি বরিশাল-২ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী। বিএনপি-জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী কিংবা স্থানীয় শীর্ষ নেতারাও ওই অনুষ্ঠানে যাননি।

জানা গেছে, সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফুয়াদ মীরগঞ্জ বাজার থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের মিছিল করে ২০০ গজ দূরে পন্টুনে যান। মঞ্চের সামনে অতিথিদের চেয়ারে বসেন। অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পর গণমাধ্যমকর্মীদের বক্তব্য দেন ফুয়াদ। চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে বক্তব্য দিলে উপস্থিত বিএনপি কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে ঘিরে ধরেন। একাধিকার তেড়ে গিয়ে ঘুসি দেওয়ার চেষ্টা করে কেউ কেউ। এবি পার্টির কর্মীরা বেষ্টনী দিয়ে ফুয়াদকে নিরাপদে সরিয়ে নেন।
সওজের বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম বলেন, সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান ছিল সওজের নিজস্ব আয়োজন। কোনো রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। ফুয়াদ বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘সেতুর কাজ শুরুর চেষ্টায় আমি গত ৭-৮ মাস মন্ত্রণালয়ে অনেক ছোটাছুটি করেছি। এত বড় একটি কাজের সফলতার আনন্দে আমি সেখানে গিয়েছি।’

বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল ইসলাম প্রিন্সের দাবি, ফুয়াদ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের মতো সেতুর কৃতিত্ব নিতে ওখানে গিয়ে শোডাউন করেছেন।
বরিশাল-মুলাদী-হিজলা সড়কে বাবুগঞ্জ ও মুলাদীর মধ্যভাগে আড়িয়াল খাঁ নদে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মিত হচ্ছে।

image_pdfimage_print