সাসেক্সের ডিউক ও ব্রিটিশ যুবরাজ প্রিন্স হ্যারি ২০০৪ সালের দিকে জিম্বাবুয়ের বিজনেসওমেন চেলসি ডেভি’র সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। সে সময় তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর অবৈধভাবে নজরদারি করার অভিযোগ উঠেছে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের ওপর। যা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এবার সেই ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন বেসরকারিভাবে নিয়োগকৃত তদন্তকারী গ্যাভিন বরোজ। খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্যাভিন বরোজ, নিউজ অফ দ্য ওয়ার্ল্ড এবং দ্য সান পত্রিকার বিরুদ্ধে চলমান আইনি মামলার একজন সাক্ষী। তিনি বিবিসির এক ডকুমেন্টারিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘ওই সময় তিনি এবং সংবাদমাধ্যমগুলো নির্মম ছিলেন।’ যদিও তার দাবিগুলো এখনো আদালতে পরীক্ষা করা হয়নি এবং দৃঢ়ভাবে বিতর্কিত।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য সান, দ্য নিউজ অফ দ্য ওয়ার্ল্ডের প্রকাশক, নিউজ গ্রুপ নিউজপেপার এবং ডেইলি মিরর পত্রিকার মালিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রিন্স হ্যারি একজন। ব্যক্তিগত ফোন হ্যাক এবং অন্যান্য অবৈধ সংবাদ সংগ্রহের কার্যকলাপের অভিযোগে তিনি এই পদক্ষেপ নেন।
ডকুমেন্টারিতে উঠে এসেছে কীভাবে প্রিন্স হ্যারি এবং মিডিয়ার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে তদন্ত করেছে বেসরকারিভাবে নিয়োগকৃত তদন্তকারী। মিডিয়া সম্পাদক অমল রাজন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন, কীভাবে তাদের গল্প সম্পর্কে ব্রিফ করা হয়েছিল। যার মধ্যে ডাচেস অফ সাসেক্সের আচরণ সম্পর্কেও অভিযোগ রয়েছে।
গ্যাভিন বরোজ বলেন, ‘সে সময় প্রিন্স উইলিয়ামের চেয়ে প্রিন্স হ্যারির প্রতি মিডিয়ার অনেক বেশি আগ্রহ ছিল। কয়েক জন সম্পাদক আমাকে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, হ্যারি মূলত নতুন ডায়ানায় (প্রিন্সেস ডায়ানা, হ্যারি ও উইলিয়ামসনের মা) পরিণত হয়েছেন।’ সম্পাদক তাকে বলেছিলেন, প্রিন্স হ্যারিকে প্রথম পাতায় রাখলে খবরের কাগজ বেশি বিক্রি হবে।
চেলসি ডেভি ও প্রিন্স হ্যারির সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালে তারা যখন ডেটিং শুরু করে, তখন এটি ব্যবসার একটি নতুন লাভজনক পথ খুলে দেয়। অনেক ভয়েসমেইল হ্যাকিং চলছিল, তার ফোনে এবং যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে প্রচুর নজরদারির কাজ শুরু হয়। চেলসি যখন তার (প্রিন্স হ্যারি) সঙ্গে দেখা করতে যেত তখন বন্ধুদের কাছে এ নিয়ে বড়াই করতো। তদন্তকারীরা তার (চেলসি ডেভি) মেডিকেল রেকর্ড, প্রাক্তন প্রেমিক এবং তার শিক্ষা জীবনের বিবরণেও আগ্রহী ছিল।’
এ সময় ক্ষমা চেয়ে এই তদন্তকারী বলেন, ‘আমি খুবই দুঃখিত। এমন করেছিলাম কারণ, আমি তখন লোভী ছিলাম, সার্বক্ষণিক কোকেইনের (মাদক) মধ্যে ডুবে থাকতাম এবং ভদ্রতার মিথ্যা জায়গায় বাস করতাম।’
‘সেই সময়ে মিডিয়ার কিছু অংশে নির্মম সংস্কৃতি ছিল। তাদের কোনো নৈতিকতা নেই এবং সেটা ছিলও না’, যোগ করেন তিনি।