পুতিনকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পরিণতির ব্যাপারে আবারও সতর্ক করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত মধ্যরাতের কিছু পর পাওয়া খবরে বলা হয় উভয়ের নির্ধারিত ফোনালাপে বাইডেন এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। যুদ্ধের দামামার মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিক ও সাধারণ মানুষের ইউক্রেন ছাড়ার প্রেক্ষাপটে দুই পরাশক্তির নেতারা কথা বললেন।
ইউক্রেন সংকট সমাধানে গত সপ্তাহেই একগাদা ইতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের নেতারা।
গত সপ্তাহে ইউক্রেন, রাশিয়া ও জার্মানি সফর করেন ফরাসি রাষ্ট্রনেতা ম্যাখোঁ। তার ওই সফরকালে, এমনকি সফর শেষেও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের নেতারা বলেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানে ইতিবাচক সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তারা। ২০১৪ সালে স্বাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন তারা। কিন্তু গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র আগের কথায় ফিরে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের বরবারের আশঙ্কাবার্তা ফের সামনে এনে এদিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, যেকোনো সময়, এমনকি চলতি মাসেই ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া।
এর মধ্যে ইউক্রেন থেকে নিজ নিজ কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিভিন্ন দেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার দেশের নাগরিকদের অবিলম্বে ইউক্রেন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। খোদ শনিবার তার দেশের বেশ কয়েকজন কূটনীতিককে ইউক্রেন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানায়। কিয়েভের দিক থেকে ‘উস্কানির’ আশঙ্কায় তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে রাশিয়া। এছাড়া বেশ কয়েকটি দেশ নিজ নিজ সাধারণ নাগরিকদেরও ইউক্রেন ত্যাগের পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে গতকালই কৃষ্ণ সাগরে বড় পরিসরে মহড়া শুরু করেছে রুশ নৌবাহিনী। অন্যদিকে ইউক্রেন থেকে নিজেদের সর্বশেষ সেনাদেরও প্রত্যাহার করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে অবস্থানরত ১৬০ মার্কিন সেনা সদস্যকে সরিয়ে ইউরোপের অন্য কোথায় মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। মার্কিন সেনা সদর দপ্তর পেন্টাগণ গতকাল এ তথ্য জানায়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র গত শুক্রবার জানায়, পোল্যান্ডে বাড়তি তিন হাজার সেনা পাঠাচ্ছে তারা।
নানামুখী উত্তেজনা বৃদ্ধির এ পর্যায়ে গতকাল শনিবার কথা বলেন ম্যাখোঁ ও পুতিন। ম্যাখোঁ ফোনে পুতিনকে বলেন, ‘আন্তরিক আলোচনার’ সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির ব্যাপারটি খাপ খায় না। ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, প্রায় ৪০ মিনিটের কথপোকথনে ম্যাখোঁ ও পুতিন ইউক্রেন সংকট সমাধানে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এবং মিনস্ক চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনার কথা বলেন তারা। এ দুই রাষ্ট্রনেতার ফোনালাপের কয়েক ঘণ্টা পর বাইডেনের সঙ্গে পুতিনের কথা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ আলাপের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। রাশিয়া সোমবারের কথা বললেও হোয়াইট হাউস জরুরিভাবে শনিবারই কথা বলতে চায়। তখরন রাশিয়া এতে সম্মত হয়।
রাষ্ট্রনেতাদের পাশাপাশি গতকাল শীর্ষ কূটনীতিক পর্যায়েও আলোচনা হওয়ার কথা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জানিয়েছিলেন, তিনি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে কথা বলবেন