দেশে গণতন্ত্র নির্বাসিত ও মানবাধিকার বিপন্ন : বুলবুল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, রাজনৈতিক জুলুম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা গুম করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জনগণকে স্তব্ধ করে রাখার জন্য সকল নীল নকশা সাঁজিয়ে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় থেকে সাধারণ মানুষসহ নেতা কর্মীদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রুলার চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি প্রশাসনকে অবৈধভাবে ব্যবহার করতেও দ্বিধা করেনি।

তিনি বলেন, দেশে রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি পালনের অধিকার কারো নেই। শ্বাসরূদ্ধকর এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আজ দেশের মানুষ অতিবাহিত করছে। দেশের ভৌগলিক নিরাপত্তা আজ নাজুক একটা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সঙ্কটময় অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে রাজপথে আন্দোলনের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, দেশে আজ আইনের শাসন ভূলন্ঠিত, গণতন্ত্র নির্বাসিত ও মানবাধিকার বিপন্ন। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

রাজশাহী বিশ্বিবিদ্যালয় সংলঘ্ন মেহেরচুন্ডীর হাফিজুর রহমান শাহীনের ১২ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে গত শনিবার আলোচনার ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শহীদ শাহীন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. দেলওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে শহীদ শাহীন স্মৃতি পরিষদের সেক্রেটারি মাহফুজ আলমের সঞ্চলনায় ভার্চুয়াল প্রোগ্রামে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ মো. রাশেদুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী, জামায়াতে ইসলামী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আমির মাওলানা আবু জার গিফারী, ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আজিজুর রহমান আযাদ, শহীদ হাফিজুর রহমান শাহীনের বাবা আব্দুল মান্নান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবু বকর, হাজারীবাগ পশ্চিম থানা জামায়াতের আমির ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আবু বক্কার, বর্তমান সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর শাখার ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুর রাকিব,মাওলানা সেতাউর রহমান ও জাহিদুর রহমান প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা ২০১০ সালে পুলিশের গুলিতে শহীদ হওয়া হাফিজুর রহমান শাহীনের ব্যবহারিক জীবনের স্মৃতি চারণ করেন। সর্বশেষ হাফিজুর রহমান শাহীনের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন অধ্যক্ষ মাওলানা কাজী জালাল উদ্দীন।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন, শহীদ হাফিজুর রহমান শাহীনসহ আমাদের সকল শহীদের একটায় অপরাধ তারা আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছিলেন। তারা মনে করেছিল, নেতাকর্মী হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনের কাজ রুদ্ধ করা হবে। কিন্তু বারবার চেষ্টা করে তারা ব্যর্থ হয়েছে। বরং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ মতিহার ছাত্রশিবিরের শহীদের রঞ্জিত হয়ে ইসলামী আন্দোলনের জন্য আরো শক্তিশালী হয়েছে। এ সময় তিনি উপস্থিত সকল নেতা-কর্মীর প্রতি আহ্বান জানান, আমরা শহীদদের উত্তরসূরী হিসেবে শহীদদের আদর্শ ধারণ করে বাংলাদেশের বুকে একটি ইসলামী সমাজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এসব শাহাদাতের বদল নেব, ইনশাআল্লাহ।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশিদুল ইসলাম বলেন, শহীদেরা আমাদের প্রেরণার উৎস, আমরা মনে করি তারা আল্লার পছন্দনীয় বান্দা ছিলেন। আমরা শহীদদের স্বপ্নপূরণে সমস্ত ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।

সভাপতি তার সমাপনী বক্তব্যে সকল অতিথিবৃন্দ ও উপস্থিতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।