অর্থনীতির প্রাণশক্তি হচ্ছে দেশের জনগণ। সে কারণেই করোনার প্রভাব বিবেচনায় নতুন বছরের বাজেটে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে জীবন-জীবিকার। সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন থেকেই বিদ্যমান বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যেও চ্যালেঞ্জ নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা পরবর্তী সময়ে অর্থনীতিকে টেনে তোলা, কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে ঘোষিত বাজেটে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপনের আগে মন্ত্রীপরিষদে এটি পাশ হয়। মোট ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নিয়ে নতুন বছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সময়োপযোগী ও কার্যকর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার কর্মসৃজন ও কর্মসুরক্ষা, অভ্যন্তরীণ চাহিদা সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা, কোভিড প্রতিষেধক টিকা প্রদান কার্যক্রমের মাধ্যমে করোনা মহামারির চলমান দ্বিতীয় ঢেউয়ের অর্থনৈতিক প্রভাবও সফলভাবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
এটি ঠিক যে, প্রতিটি চ্যালেঞ্জই নতুন কিছু সম্ভাবনা তৈরি করে। করোনার এই কঠিন সময় পরবর্তী সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতেই ঘোষিত বাজেটের ব্যয় কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে জীবন-জীবিকা রক্ষার মাধ্যমে কর্মমুখী ও প্রবৃদ্ধিমুখী অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ ঘটানো সম্ভব হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতা বৃদ্ধি, কর্পোরেট কর হার হ্রাস, কিছু স্থানীয় শিল্পে প্রণোদনা দিয়ে শিল্পায়ন এবং ২০৪১ সালে দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অতীতের ন্যায় প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে মানবসম্পদ তথা শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে বাড়ানো হয়েছে বরাদ্দ। ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বাজেট কাঠামো :প্রস্তাবিত বাজেট মোট ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে। এডিপি বরাদ্দ ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। অনুন্নয়ন খাতে রাখা হয়েছে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এই ব্যয় নিশ্চিত করতে আয়ের টার্গেট করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত উত্স থেকে রাজস্ব পাওয়া যাবে ১৬ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে, করবহির্ভূত খাত থেকে পাওয়া যাবে ৪৩ হাজার কোটি টাকা।