ভারতের কর্ণাটকের হিজাব বিতর্ক দেশটির বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ছড়িয়ে চলেছে। এর মধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে কর্ণাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হিজাব ইস্যুতে আদালতে শুনানিও চলছে। বুধবার শুনানিতে হিজাবের পক্ষের আবেদনকারীরা ভারতে অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় চিহ্ন ধারণে বাধা না থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন।
হিজাব ইস্যুতে কর্ণাটকের হাইকোর্টে বুধবার চতুর্থ দিনের মত শুনানি হয়েছে। এদিনের শুনানিতে মুসলিম ছাত্রীদের পক্ষের আইনজীবী রবি বর্মা কুমার বলেন, ‘ঘোমটা পড়া যাবে, বালা পড়া যাবে, তবে কেবল হিজাব কেন নয়? কেন শিখদের পাগড়ি, খ্রিস্টানদের ক্রস নিষিদ্ধ নয়?’
রবি বর্মা কুমারের ভাষ্য, স্রেফ সাম্প্রদায়িক কারণে কেবল মুসলিম মেয়েরা বৈরিতামূলক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
কর্ণাটক রাজ্যের উদুপি জেলায় এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাসে ছাত্রীদের হিজাব পড়তে নিষেধ করা থেকে এ বিরোধের সূত্রপাত। এক পর্যায়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে কয়েকদিন রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
কয়েকদিন বন্ধ রাখার পর কর্ণাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে বলা হয়েছিল, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীরা যেন হিজাব না পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার কর্ণাটকের এক কলেজে কিছুসংখ্যক মুসলিম ছাত্রী হিজাব বা বোরখা পড়ে ঢোকার চেষ্টা করলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের আদালতের নির্দেশনার কথা বলে বাধা দেন।
ছাত্রীদের দাবি, হিজাব না পড়ার ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ আগে থেকে কিছু জানায়নি। শিক্ষার্থীরা জোর করে ঢুকলে তাদের একটি কক্ষে হিজার রেখে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
হিজাব উত্তেজনার জেরে গত রবিবার উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে মুসলিম নারীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। ইতিমধ্যে সেখানকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ। এতে বলা হয়েছে, ১৫ জন মুসলিম নারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এক সরকারবিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেয়। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তখন ‘অস্থিতিশীল পরিস্থিতির’ সৃষ্টি হয়।