The chairman looked at the cost of the MD interview, which was 4.2 million taka.

ব্যাংকিং খাতে পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব পুরনো। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে পৃথক কিছু স্বাধীনতা দেওয়া হয়। নিষেধ রয়েছে দৈনন্দিন কাজে পরিচালনা পর্ষদের হস্তক্ষেপ করা যাবে না। বাস্তবে কি তাই হচ্ছে? কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রগুলো বলেছে, একেক ব্যাংক একেক স্টাইলে চলছে। কোনো কোনো ব্যাংক রয়েছে যেখানে ‘সিস্টেম’ করে একই ব্যক্তি দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান পদে রয়ে যাচ্ছেন। কোনো কোনো ব্যাংকে চেয়ারম্যান রোজ এসে ‘খাতা’ খুলে বসেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) ডাকেন। কাকে ঋণ দিতে হবে, কাকে দেওয়া যাবে না—সেই নির্দেশনা দেন। তার খাতার তালিকার ব্যত্যয় ঘটলেই এমডি সাহেবের আর নিস্তার নেই। কোনো কোনো ব্যাংকে উদ্যোক্তা বা চেয়ারম্যানকে টাকা পাইয়ে না দিলে ঐ এমডির চাকরিও থাকে না। প্রথম প্রজন্মের একটি বেসরকারি ব্যাংকের এক এমডিকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। কারণ, তিনি উদ্যোক্তার ছেলেকে সন্তুষ্ট করতে পারেননি।

কোনো কোনো ব্যাংক রয়েছে যেখানে এমডিদের চেয়ারম্যান বা উদ্যোক্তাদের চাহিদামতো টাকা দিতে হয়। এই টাকা এমডিকে জোগাড় করতে হয় গ্রাহকদের কাছ থেকে। কোনো গ্রাহকের নামে ঋণ হিসাব চালু করে তার পুরোটা কিংবা অংশ বিশেষ দিয়ে দিতে হয়। বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের কয়েক জন গ্রাহক এখন ঐ ঋণ হিসাবের সুদ, দণ্ডসুদে জর্জরিত। আর পরিচালকদের বেনামি ঋণ তো আছেই।

চেয়ারম্যান খাতা নিয়ে বসেন, এমডির ইন্টারভিউয়ের খরচ ৪২ লাখ টাকাজনগণের আমানতের টাকায় ব্যাংক চললেও উদ্যোক্তারা নিজেদেরই ব্যাংকের মালিক ভাবেন। চেয়ারম্যান, পরিচালকরা ব্যাংকের গাড়ি ব্যবহারসহ নানান সুবিধা নেন। ঋণ পাইয়ে দেওয়ার তদবির তো আছেই। সরকারি ব্যাংকেও কোনো কোনো পরিচালক এক-দুই মেয়াদে পরিচালক থাকার সুবাদে আখের গুছিয়েছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে।

অপরদিকে, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদেরও দাপট রয়েছে। সরকারি ব্যাংকের এমডি হলে তিনি প্রভাবশালীদের ‘অনুগত’ হন। সরকারি ব্যাংকের এমন এমডিও রয়েছে যিনি তার ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে দ্বিতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান নিযুক্তি নিশ্চিত করেছেন। দুদকের চলমান মামলাও কোনো এক সরকারি ব্যাংকের এমডির পুনঃনিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অনিয়মের অভিযোগ থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক তার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে আপত্তি জানায়। কিন্তু তাদের আপত্তিকে উপেক্ষা করে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক তাকে পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিতে বাধ্য হয়।

অপর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের একটি শাখার এক জন মহাব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত একটি ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ সত্ত্বেও তাকে পদোন্নতি দিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে উক্ত ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে বৃহৎ ঋণখেলাপি এবং প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোনো কোনো কর্মকর্তার তদবিরের মাধ্যমে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী নিয়োগ দেওয়ার ঘটনাও রয়েছে।

বেসরকারি ব্যাংকেও প্রভাবশালী এমডি রয়েছেন। এক ব্যাংকের এমডি বিদেশি একটি ম্যাগাজিনে সাক্ষাত্কার ছাপানো বাবদ খরচ করেছেন ৪২ লাখ টাকা। দক্ষতার সাফাই গাইতে কেউ কেউ এ ধরনের কৌশলের আশ্রয় নিয়ে থাকেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলেছে, চারদিকে প্রভাবের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্দেশিত হওয়ার আগ পর্যন্ত পদক্ষেপ নিতে পারছে না। অন্যদিকে, পেশাদারিত্বের বিষয়টিও এখন গৌণ হয়ে গেছে। এমডি পদে আসীন হতে অনেকেই এখন লবিং, মুচলেকা দিচ্ছেন। এমন ব্যাংকও রয়েছে যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক এমডি পদে নারাজি দিলেও একই ব্যক্তিকে এমডি করার জন্য বারবার নাম পাঠানো হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাংকিং খাতে নিবিড় তদারকি জোরদার করার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সূত্র।বেনাপোল দিয়ে দেশত্যাগ করেন পি কে হালদার

 

একটি বেসরকারি ব্যাংকের সাবেক এক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, মূলত সুশাসনের অভাবে ব্যাংকিং খাতে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ম্যানেজমেন্ট লেভেল ও পরিচালনা পর্ষদের মধ্যে সম্মিলন হচ্ছে না। এখনকার সময়ে ব্যাংকিং হয়ে গেছে ব্যবসায়ীবান্ধব। অথচ হওয়া উচিত ছিল ব্যবসাবান্ধব। এখন বাতাস যেদিকে যায় ব্যাংকের এমডিরা সেদিকে দৌড়ায়। একটা বিষয় খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, ব্যাংকের বোর্ডগুলোতে একক কোনো ব্যক্তি, গ্রুপ বা পরিবার শক্তিশালী হয়ে গেছে। ব্যাংকের এমডিরা ঐ ব্যক্তি বা গ্রুপের কথামতোই কাজ করেন। সম্প্রতি ব্যাংক কোম্পানি আইন সুশাসন নষ্ট করার জন্য বড় ভূমিকা রেখেছে বলেও তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, এক পরিবার থেকে চার জন সদস্য থাকলে স্বাভাবিকভাবে তারা তো প্রভাবশালী হবেনই। তো ঐ প্রভাবশালী গ্রুপের বিপক্ষে এমডিরা যেতে চান না।

 

image_pdfimage_print