আদালতে শুনানির জন্য সু চির আইনজীবী রাখা হয়নি

দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইনের মামলায় আদালতের আসন্ন শুনানিতে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির কোনো আইনজীবীকে তালিকাভুক্ত করা হয়নি। সু চির শীর্ষ আইনজীবী আজ শুক্রবার এই অভিযোগ করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

সংশ্লিষ্ট আইনজীবী খিং মং জাও বলেন, সু চিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সামরিক জান্তার করা মামলায় ২৩ জুন শুনানির তারিখ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু আদালতে বিবাদীদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কোনো আইনজীবীকে তালিকাভুক্ত করা হয়নি। আদালতে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বিবাদীদেরই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সু চির শীর্ষ আইনজীবী খিং মং জাও। তিনি বলেন, ‘আমরা উদ্বিগ্ন যে আদালতে তাঁদের (বিবাদী) কোনো আইনি প্রতিনিধি থাকবেন না। শুনানিতে কোনো স্বচ্ছতা থাকবে না।’

সু চির এই আইনজীবীর অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বা সামরিক জান্তার মুখপাত্রের বক্তব্য জানা রয়টার্সের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া মামলাটি সরাসরি শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বিষয়েও কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিলে এর বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ থাকবে না।

৭৫ বছর বয়সী সু চির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে মামলা করেছে জান্তা। তার মধ্যে দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইনের মামলাটি গুরুতর। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

সু চি বর্তমানে গৃহবন্দী। অন্য এক মামলায় সম্প্রতি তাঁকে প্রথমবারের মতো সশরীরে আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

মিয়ানমারে গত বছরের নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল জয় ভোটে পায়। নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা অভিমত দেয়। তবে এই নির্বাচনে কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ আনে দেশটির সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর এই অভিযোগ নাকচ করে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচনে কথিত জালিয়াতির অজুহাত তুলে দেশটির সেনাবাহিনী গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান করে। তারা সু চির নির্বাচিত সরকার উৎখাতের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতা দখল করে। একই সঙ্গে সু চিসহ দেশটির বেসামরিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করে।

সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই দেশটির গণতন্ত্রপন্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সেনাশাসনবিরোধী এই বিক্ষোভে জান্তার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত আট শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া হাজারো বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।