আওয়ামী লীগের কাছে তালগাছ চাইলেন বুয়েট উপাচার্য

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে তালগাছ রোপণের জন্য আওয়ামী লীগের কাছে চারা চেয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্যপ্রসাদ মজুমদার।

এছাড়া তিনি দেশে বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনার জন্য নির্বিচারে তালগাছ কাটা এবং বনায়ন উজাড় করাকে দায়ী করে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বেশি বেশি তালগাছ রোপণের পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বনায়ন রক্ষা করতে এবং গাছ লাগানোকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের কাছে তালগাছ চাইলেন বুয়েট উপাচার্য

আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির কাছ থেকে এক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির চারা গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

 

সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, “বিল্ডিংয়ে কিন্তু আজকাল বজ্রপাত হচ্ছে। গ্রামে-গঞ্জে তালগাছ না থাকার কারণে কিন্তু প্রতিদিনই মানুষ মারা যাচ্ছে। তালগাছ থাকলে ওই এলাকায় বজ্রপাত হলে তালগাছ কিন্তু সেটিকে টেনে নেবে। এজন্য আগে প্রতিটি গ্রামে একসাথে অনেকগুলো তালগাছ একজায়গায় দেখা যেতো। আজকে সেটি নেই।

“আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ কমিটি আমাদের এক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির চারা দিয়েছেন। আমি তাদের কাছে অনুরোধ করছি আমাদের যেন কিছু তালগাছের চারা দেয়া হয়।”

 

এ সময় বন উজাড় করে শহর বানানোর সমালোচনা করে বুয়েট উপাচার্য বলেন, “একদিকে গাছ লাগাব আরেকদিকে গাছ কাটব সেটি হবে না। বনায়ন করতে হবে, বনকে রক্ষা করতে হবে। একটি গাছ তৈরি করা যায় না। বীজ লাগালেই যে গাছটি হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।”

 

 

আওয়ামী লীগের কাছে তালগাছ চাইলেন বুয়েট উপাচার্য

বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান বলেন, “ভুটানে বনভূমি ৭৫ ভাগ। ভুটানকে বলা হয় ‘কার্বন নেগেটিভ’। বাংলাদেশকে হয়তো রাতারাতি কার্বন নেগেটিভ দেশে নিয়ে যেতে পারব না, তবে যেভাবে চেষ্টা করছি তাতে আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত বাংলাদেশকে আমরা ‘কার্বন নিউট্রাল’ দেশে নিয়ে যাওয়া। তারপর সেখান থেকে কীভাবে ‘কার্বন নেগেটিভ’ দেশে তালিকায় যেতে পারি সেদিকে খেয়াল দেওয়া উচিত।”

 

গাছ লাগানোকে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে নিতে মানুষকে সচেতন করতে বুয়েটকে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয় সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, “আমরা যারা পরিবেশ নিয়ে কাজ করি বা যারা কাজ করেন দেশমাতৃকার প্রয়োজনেই করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি আমাদের অনুরোধ ছিলো বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে-সেটি কারিগরি শিক্ষায় হোক, ভৌত অবকাঠামো হোক, সেটি নদী হোক, মাটি হোক বা প্রযুক্তি হোক। যে কোনো কিছু এই বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য তারা কাজ করছে। পথ দেখিয়েছে উদ্ভাবন করে, গাইড করছে।

 

 

 

“পরিবেশের জন্যও যদি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের সাথে সাথে সব বিষয়ে কাজ করেন মানুষের প্রয়োজনে মানুষের উদ্দেশ্যে যদি বলেন তাহলে পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান আরও নতুন মাত্রা পাবে।”

 

দেশকে ২৫ ভাগ বনভূমিতে আচ্ছাদিত করতে আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনাদের কথা পরামর্শ মানুষ সম্মানের সাথে দেখে, একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে আপনার কথার মূল্যায়ন করে। আপনার বললে বৃক্ষরোপণের এই কর্মসূচি তারা সামাজিক আন্দোলন হিসেবে নেবে।”

 

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা করতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সবাইকে সবুজ বাংলাকে আরও সবুজ করতে হবে। আমাদের প্রকৌশলীরা দেশের উন্নয়নে জড়িত। আগামীতে গ্রিন ডেভেলপমেন্ট অবকাঠামো উন্নয়ন ও গাছ লাগানোয় বিপ্লব সৃষ্টি করতে হবে।”