দিন দিন আইপিএল ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগগুলোর দৌরাত্ম্য বাড়ছে। ফলে গুরুত্ব হারাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। নিজ দেশের খেলা রেখে ক্রিকেটাররা ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের গুরুত্ব বাড়াতে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চগুলোতে প্রতিযোগী বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন আইসিসির বর্তমান চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে।

ভারত সফরে গিয়ে আইপিএল পর্যবেক্ষণ করে এসব পরিকল্পনার কথা জানান বার্কলে। তিনি বলেন, ‘আইপিএলের মতো ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোর আয়োজন সদস্য দেশগুলির অধীনে। তারা যেভাবে ইচ্ছা টুর্নামেন্ট চালাতে পারে। আইপিএলের মতো জনপ্রিয় প্রতিযোগিতায় ম্যাচের সংখ্যা (৬০ থেকে ৭৪টি করা হয়েছে) বাড়ছে। আগের আট দলের জায়গায় এখন ১০ দল হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও অনেক দেশের ঘরোয়া লিগের পরিধিও বাড়ছে।’
তিনি যোগ করেন, ‘বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা দেশের হয়ে খেলার থেকে আইপিএল ও অন্যান্য লিগে খেলতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। বছরে তো ৩৬৫ দিনই রয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই দ্বিপাক্ষিক সিরিজের জন্য সময় কমছে। তার ফলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করতে কিছুটা হলেও সমস্যা হচ্ছে।’
তার এই মন্তব্যেরও যথাযথ উদাহরণ আছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজ চলাকালীন অনেক প্রোটিয়া ক্রিকেটার দেশের হয়ে খেলার চেয়ে আইপিএলকে প্রাধান্য দিয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যকার সাদা বলের সিরিজেও। টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের চেয়ে গুরুত্ব দিয়েছে এই আইপিএলকেই।
অবশ্য সমস্যার সমাধানও আছে বার্কলের কাছে। তিনি বলেন, ‘কোনো দেশ যদি ঘরোয়া লিগ শুরু করে সেক্ষেত্রে আইসিসির কিছু করার থাকে না। আমরা কিছু বিকল্প উপায়ের কথা ভেবেছি। যেমন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ না করে আইসিসির প্রতিযোগিতাগুলোয় দলের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে।’
আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবে ১২টি দল। তবে ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত হতে যাওয়া টুর্নামেন্টে দল বাড়িয়ে ২০টি করার পরিকল্পনা আছে আইসিসির। তবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রতিযোগী দলের সংখ্যা মাত্র ৮-১০টি ।
এদিকে দুশ্চিন্তা থাকলেও বার্কলে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটির প্রশংসাও করেছেন একগাল। বার্কলে বলেন, ‘আমি আইপিএলের মতো প্রতিযোগিতা ভালোবাসি। কারণ এসব প্রতিযোগিতা থেকে অনেক তরুণ ক্রিকেটার উঠে আসে। ঘরোয়া লিগ না হলে হয়তো তারা এতটা পরিচিতি পেত না। ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সেটা সব থেকে ভালো বিষয়।’
তিনি যোগ করেন, ‘করোনার কারণে দুই বছর ঘুরতে পারিনি এবং এই লিগে আসতে পারিনি। ভারতে ফিরে আসাটা দারুণ এবং এটিই আমার প্রথম আইপিএল সফর। আমি আইপিএল পছন্দ করি এবং এটি একটি দুর্দান্ত অনুষ্ঠান। আমি মনে করি ভারত এবং বিসিসিআই ক্রিকেটের ক্ষেত্রে ভিন্ন কিছু করেছে। এটি এমন একটি প্রতিযোগিতা যা দেখা এবং এর অংশ হওয়া গর্বের বিষয়।’