বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্বশুরকে বাবা বানিয়ে চাকরি নেওয়ার ঘটনায় বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের অফিস সহায়ক (পিয়ন) শামীম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এসএম শামীম আহমেদ এই সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে শামীমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ার কাহালু উপজেলার নারহট্ট ইউনিয়নের মাধববাঁকা গ্রামের মৃত করমতুল্লাহর ছেলে শামীম হোসেন পেশায় এক সময় আদালতের মুহুরি ছিলেন। চতুর শামীম সরকারি চাকরির আশায় সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছার বীর মুক্তিযোদ্ধা সোনা মিয়ার মেয়ে ফেনসি খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর মাধ্যমিক পাশ মুহুরি শামীম সরকারি চাকরির জন্য শ্বশুর সোনা মিয়াকে ‘বাবা’ বানানোর উদ্যোগ নেন। এরপর শিক্ষা সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতা মৃত করমতুল্লাহর স্থলে শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা সোনা মিয়ার নাম বসান। এমনকি পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টও তার পক্ষে নেন। এরপর মুহুরির পেশা ছেড়ে সোনা মিয়ার ছেলে সেজে ২০১০ সালের নভেম্বরে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে অফিস সহায়কের চাকরি নেন।
শুধু তাই নয়, তার স্ত্রী ফেনসি খাতুনও বাবার মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মৎস্য অফিসে অফিস সহায়ক পদে চাকরি পান। তিনি বর্তমানে দুপচাঁচিয়া উপজেলা মৎস্য অফিসে কর্মরত রয়েছেন। স্ত্রীর সাথে একই উপজেলায় চাকরি করতে তিনিও (শামীম হোসেন) দুপচাঁচিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ে পোস্টিং নেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্বশুরকে বাবা বানিয়ে চাকরি নেওয়ার ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশের পর ১০ নভেম্বর তাকে বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্ত হওয়া শামীম হোসেনের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার কোনো মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী শাকিউল ইসলাম জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্বশুরকে বাবা বানিয়ে চাকরি নেওয়ার ঘটনাটি পত্রিকায় প্রকাশ হয়। এরপর অফিস সহায়ক শামীম হোসেনের সকল কাগজপত্র চান রাজশাহী সার্কেল অফিস। মুক্তিযোদ্ধা সোনা মিয়ার ওয়ারিশান সনদে শরিক হিসেবে তার নাম না থাকায় অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। ফলে রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ১০ নভেম্বর স্বাক্ষরিত পত্রে শামীম হোসেনকে অফিস সহায়ক পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি হবে। তিনি যে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ওয়ারিশ সেটি প্রমাণ করার জন্য বলা হবে। প্রমাণ করতে ব্যার্থ হলে ঊর্ধতন কর্তপক্ষ তার বিরুদ্ধে সীদ্ধান্ত নেবেন।