রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পরীমণিকে কারাগারে পাঠানোর যুক্তি তুলে ধরেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও তদন্ত কর্মকর্তা।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) পরীমণির মামলার শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের জানান, আসামি পরীমণির বাসা থেকে যেহেতু সাড়ে ১৮ লিটার মদ, এলএসডির মতো মারাত্মক মাদক পাওয়া গেছে, লাইসেন্স ছিল না এবং মামলাটি তদন্তানাধীন থাকায় আমরা আদালতে তার জামিনের বিরোধিতা করেছি।
তিনি বলেন, আসামি পরীমণিকে তদন্ত কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বিরুদ্ধে তথ্য পেয়েছেন। এখন সেসহ তথ্য যাচাই-বাছাই করছেন। এ পর্যায়ে জামিনের কোনও সুযোগ নেই। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে জামিন নামঞ্জুর করেছেন। তিনি বলেন, আইনের চোখে সবাই সমান। কে অভিনেতা‑ সেটা বড় কথা না। অন্য মামলায় যাদের কাছে এসব ভয়াবহ মাদক পাওয়া যাচ্ছে তাদের জামিন হচ্ছে না। তাহলে এক্ষেত্রে কেন হবে। আসামি পুরুষ বা নারী সেটা বিবেচনার কিছু নেই।
তবে পরিমনির আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালতকে তারা বলেন, পরীমনি ‘ভারটিগো’ এবং ‘প্যানিক অ্যাটাক’-এর রোগী। তিনি দীর্ঘসময় পুলিশ কাস্টডিতে (হেফাজতে) অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বিপর্যস্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। হেফাজতে থাকলেও মামলা সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটিত হয়নি। জরুরি চিকিৎসার স্বার্থে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া আবশ্যক।
এর আগে রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের আদালতের হাজত খানায় রেখে মামলার শুনানি শুরু হয়। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাজী গোলাম মোস্তফা। পরীমণির পক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিনের আবেদন করে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জামিন বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বুধবার (৪ আগস্ট) রাতে প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগীকে আটক করে র্যাব। তার বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। আটকের পর তাদের নেওয়া হয় র্যাবের সদর দফতরে। বুধবার রাতভর সেখানেই থাকতে হয় পরীমণিকে। পরদিন র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদক আইনে পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা করে।