আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর ১ নম্বর আমলি আদালতে মামলা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার সোসাইটি রাজবাড়ীর পৌর শাখার সভাপতি শশি আক্তার। রাজবাড়ী আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট খান মো. জহুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতের বিচারক সুমন হোসেন পিবিআই ফরিদপুরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মেহেদী হাসান জানান, মামলায় মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার ব্যাপারে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে খুঁটি পুঁতে সড়ক অবরোধ
গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার বনমালা সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য জমি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ থেকে ৩০ পরিবারের লোকজন ক্ষতিপূরণের দাবিতে সকাল ১১টার দিকে বাঁশের খুঁটি পুঁতে ওই বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে অবস্থান নেয় পুলিশ।
পুলিশ, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কোরবানি ঈদের আগে মেয়রের তত্ত্বাবধানে গাজীপুরের সঙ্গে টঙ্গীর যোগাযোগ উন্নত করতে বনমালা সড়কটি নির্মাণ করা হয়। সড়ক নির্মাণের সময় প্রশস্তকরণের জন্য টিনশেড বাড়ি, দোকান ও অন্য স্থাপনা ভেঙে জমি দেয় স্থানীয়রা। ওই সময় মেয়র আশ্বাস দিয়েছিলেন ক্ষতিপূরণ দেবেন। গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর তাঁর মেয়র পদটিও ঝুঁকিতে পড়েছে। এ কারণে জমি দানকারীরা ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের কোনো নিয়ম মানা হয়নি। ফলে সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে অনেক পরিবার ভিটেছাড়া হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষতিপূরণ পায়নি। এরই প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ করে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (দক্ষিণ) হাসিবুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে বিক্ষোভকারীরা খুঁটি সরিয়ে অবরোধ তুলে নেয়।
এ ব্যাপারে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সড়কের জন্য জায়গা ছিল না। এলাকার মানুষকে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হতো। স্থানীয় মানুষের অনুরোধেই আমি সড়কটি করেছিলাম। ওই সময় তারা স্বেচ্ছায় জমি দিতে রাজি হয়েছিল। তাদের জমি ও ঘরবাড়ির ক্ষতিপূরণের আশ্বাস ছিল। অনেককে দেওয়া হয়েছে। অল্প কিছু বাকি আছে। বাকি ক্ষতিপূরণও দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এখন আমার দুঃসময়ে তারা বিক্ষোভ করছে।’