মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় গাজী মাজহারুল

বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরে শায়িত হলেন কিংবদন্তি গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার। আজাদ মসজিদে তৃতীয় নামাজে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাদ আছর তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে এফডিসিতে তার প্রথম জানাজা হয়। এরপর তাকে নেয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সেখানে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গুলশানের আজাদ মসজিদে তৃতীয় নামাজে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরে সমাহিত করা হয় গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়। সেখানে তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়া হয়। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণিপেশা ও সংগঠনের মানুষ গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে শ্রদ্ধা জানায়।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটের দিকে মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। রোববার ভোরে তিনি বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার দীর্ঘ ছয় দশক ধরে বেতার, টেলিভিশন ও সিনেমাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ার গীতিকবিতায় অবদান রাখার জন্য ২০০২ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ২০২১ সালে স্বাধীনতা পদক, ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক, এস এম সুলতান স্মৃতি পদক, একাধিকবার বাচসাস পদক সহ অসংখ্য পুরস্কার রয়েছে তার অর্জনে। এছাড়া পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গানের এই গীতিকার।

তার লেখা উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে’।

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। তার গানে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি, জীবনবোধ, প্রেম, বিরহ, স্নেহ’সহ আরও নানা প্রসঙ্গ।