পাকিস্তানে রাজনীতিক হত্যা বা হত্যাচেষ্টা নতুন নয়। ইমরান খান সৌভাগ্যক্রমে রক্ষা পেলেও প্রাণ হারিয়েছেন লিয়াকত আলী খান থেকে বেনজির ভুট্টোর মতো প্রভাবশালী রাজনীতিকরা।
সামরিক আমলে ফাঁসিতে ঝুলানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোকে। যে সব হত্যাকাণ্ডের কূল-কিনারা আজও হয়নি।
চলতি বছরের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটের আগে ইমরান খান জানান তার জীবন হুমকিতে। তবে তিনি ভীত নন, স্বাধীন, গণতান্ত্রিক পাকিস্তানের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এসব অভিযোগ আর দাবির ৯ মাসের মাথাতেই হামলার শিকার হলেন ইমরান খান। রক্ষা পান অল্পের জন্য। লংমার্চ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার সময়ই এই হামলা করা হয়।
পাকিস্তান কখনোই রাজনীতিকদের জন্য সুখকর ছিলো না। হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ফাঁসির মতো নৃশংস অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের।
পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানকে ১৯৫১ সালের ১৬ই অক্টোবর রাওয়ালপিন্ডির কোম্পানিবাগে হত্যা করা হয়। যা বর্তমানে লিয়াকতবাগ।
মোহাম্মদ আলীর জিন্নাহর ঘনিষ্ঠ সহযোগী লিয়াকত আলীর হত্যাকাণ্ড এখনো রহস্যময়। ধারণা করা হয় উগ্রবাদের বিরোধিতা হত্যাকাণ্ডের কারণ।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী রাজনীতিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ১৯৭৯ সালের চারই এপ্রিল ফাঁসি দেন সামরিক শাসক জিয়াউল হক। যাকে বিচারিক হত্যাকাণ্ড বলা হয়।
১৯৭৮ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জিয়া। ১৯৭৭ সালের ৫ই জুলাই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলীকে হটিয়ে ক্ষমতা নেন তিনি।
ভুট্টোকে ফাঁসি দেয়ার নয় বছরের মাথায় বিমান দুর্ঘটনায় ১৯৮৮ সালের ১৭ই আগস্ট নিহত হন জিয়াউল হক। যাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলা হয়।
হামলার জন্য জিয়াউল হকের পরিবার জুলফিকারপুত্র মুরতজা ভুট্টোকে দায়ী করেছেন অনেকবার। যদিও এর দাবির প্রমাণাদি উত্থাপন করা হয়নি।
২০০৭ সালের ২৭শে ডিসেম্বর। রাওয়ালপিন্ডির সেই লিয়াকতবাগ। হত্যাকাণ্ডের শিকার হন জুলফিকার আলী ভুট্টোর কন্যা পাকিস্তানের দুইবারের প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো।
দু’মাস আগে করাচিতে তাকে হত্যা করতে চালানো হামলায় নিহত হন ১৮০ জন। সৌভাগ্যক্রমে রক্ষা পান তিনি। হামলার নির্দেশদাতা কে, আজও অজানা। পাকিস্তান তালেবানকে দায়ী করা হয়।
শুরু হয় তৎকালীন সামরিক শাসন পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভ। ২০২১ সালে মোশাররফ জানান, ওই হত্যায় তার প্রশাসনের লোকজন জড়িত থাকতে পারে।