দেশে এ সময় বিভিন্ন ভাইরাল ফিভারের প্রকোপ বেড়ে যায়। ডেঙ্গুর প্রকোপ তো আছেই, পাশাপাশি অনেক রোগী সর্দি-কাশি, মাথা ব্যথা, গায়ে ব্যথা নিয়ে আমাদের কাছে আসছেন। এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায়, জ্বরটা হয়তো খুব বেশি উঠছে না– ১০০ থেকে ১০১, অথচ প্রচুর সর্দি-কাশি।
এমন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ ডেঙ্গুর এখন যে প্রকোপ চলছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ডেঙ্গু জ্বরের যে ক্ল্যাসিক্যাল প্রেজেন্টেশন যেমন– গায়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা ছাড়াও এবার অনেক ক্ষেত্রে সর্দি-কাশি থাকছে। সে জন্য কারও সর্দি-কাশি হলে অবশ্যই হাসপাতালে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করানো ভালো।
এবারের ভাইরাল ফিভারের ট্রেন্ডে দেখা যাচ্ছে, রোগীর ভীষণ কাশি হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে কাশিটা শুকনো ধরনের, কারও কাশি আবার প্রডাকটিভ। এত কাশি হয় যে কাশতে কাশতে রোগী বমি পর্যন্ত করে ফেলেন। কিছুতেই কাশি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ঘুমের মধ্যে কাশিটা আরও বেড়ে যায়। ভাইরাল জ্বরের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের পর কাশি ভালো হয়ে যায়। এটা নিয়ে খুব বেশি ভয়ের কারণ থাকে না।
এবারের ভাইরাল জ্বরের ট্রেন্ডে আরও দেখা যাচ্ছে, জ্বর সেরে যাওয়ার পরেও শরীর সাংঘাতিক দুর্বল। হয়তো জ্বরটা ছিল তিন দিন, দুর্বলতা রয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু দিন। রোগী কোনো কাজ করতে পারছেন না। এ জন্য আমরা বলি, জ্বর থাকলেও পুষ্টিকর ও তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন– শরবত, বিভিন্ন ফলের রস, ডাব, গরম স্যুপ ইত্যাদি। এতে কাশির প্রকোপও কমবে। অনেক রোগীর অভিযোগ, জ্বরে বমি হচ্ছে বা বমি বমি ভাব থাকছে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক ওষুধ দিয়ে বমি ভাব কাটানোর চেষ্টা করবেন। বমি ভাব কেটে গেলে যতটা পারা যায় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। তাহলে পোস্ট ভাইরাল দুর্বলতা অত বেশি থাকবে না। রোগী দ্রুত সুস্থও হয়ে উঠবেন। ভাইরাল জ্বর হলে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু জ্বর যদি সাত দিনের বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টা আমলে নিয়ে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। তবে আবারও বলছি, যেহেতু এখন ডেঙ্গু প্রকট আকার ধারণ করেছে, এ কারণে জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করে নেওয়া শ্রেয়।
Author: কনসালট্যান্ট, মনোয়ারা হসপিটাল (প্রা.) লিমিটেড, সিদ্ধেশ্বরী, ঢাকা।