উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধের পাশাপাশি সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। কারণ হিসেবে তারা মনে করেন শুধু ওষুধ খেলেই রক্তচাপের সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি মেলে না। এর জন্য সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম অনুশীলন করতেও অনেক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে ৩টি ব্যায়াম আছে যা মোটেও করা যাবে না উচ্চ রক্তচাপের রোগীর ক্ষেত্রে।
চিকিৎসাশাস্ত্রে, হৃৎপিণ্ডের ধমনিতে রক্ত প্রবাহের চাপ অনেক বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দুটি মানের মাধ্যমে এই রক্তচাপ রেকর্ড করা হয়। উচ্চসংখ্যা মানের প্রেশারকে বলা হয় সিস্টোলিক প্রেশার আর নিম্নসংখ্যাবিশিষ্ট মানের প্রেশারকে বলা হয় ডায়াস্টলিক প্রেশার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব বলছে, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগে থাকেন বিশ্বের প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ। আর এই সমস্যায় সারা বিশ্বে প্রায় ৭০ লাখ মানুষপ্রতি বছর মারা যায়।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৪০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে ২৬ শতাংশই উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। এদিকে ‘বাংলাদেশ জনমিতি স্বাস্থ্য জরিপ ২০১৭-১৮’-এর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি চারজনের একজন উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভোগে থাকেন।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। যাদের লো প্রেশার তাদের এই রেট থাকে ৯০/৬০ বা এর আশপাশে। কিন্তু ব্লাড প্রেশার রিডিং যদি ১৪০/৯০ বা এর চেয়েও বেশি হয়, তখন বুঝতে হবে তার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে। এই অবস্থায় যে ৩টি ব্যায়াম থেকে অবশ্যই রোগীকে দূরে থাকতে হবে তা হলো ওয়েট লিফ্টিং, স্প্রিন্টিং এবং স্কোয়াশ।
ওয়েট লিফ্টিং ব্যায়াম হাড় ও পেশি শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। তবে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ‘ওয়েট লিফ্টিং’-এর অনুশীলন এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ এতে রক্তচাপের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আর স্পিন্টিং ও স্কোয়াশের মতো অতি পরিশ্রমের ব্যায়ামগুলো অনুশীলন করা থেকে বিরত থাকতে বলেন চিকিৎসকরা। কারণ এতে শরীরে রক্তচাপের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
উচ্চ রক্তচাপ থাকলে এইসব শরীরচর্চা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অতিরিক্ত পরিশ্রমের কোনো কাজ বা ব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হলে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।